মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, স্বাধীন বাংলাদেশের দীর্ঘতম সময় (২০১৩-২০২৩) প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার দায়িত্বকালীন সময়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বঙ্গভবন ব্যবহার করেছেন ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো। সরল ও রসিক ব্যক্তিত্বের আড়ালে লুকিয়ে ছিলো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের গভীর ছাপ।
রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার করে বঙ্গভবনের ভেতরে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল ‘রঙমহল’। সেখানে সুইমিংপুলসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। এ প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা বাড়িয়ে ২০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। এর মধ্য থেকে অন্তত ১০ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে।
বঙ্গভবনের ভেতর প্রতিদিন সন্ধ্যার পর চলতো আবদুল হামিদের ব্যক্তিগত বৈঠক। এসব বৈঠকে নিয়োগ ও বদলির তদবিরের মাধ্যমে চলতো অর্থ আদান-প্রদান। গভীর রাতে জমতো গানের আসর, যেখানে প্রায়ই উপস্থিত থাকতেন বিতর্কিত কর্মকর্তা ডিবি হারুন।
কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল বিদীর্ণ করে ৮৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিযোগও রয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমী ও পরিবেশবিদদের মতামত উপেক্ষা করে তৈরি করা এই সড়ক এখন এলাকাবাসীর জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
বিলাসবহুল ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ নির্মাণে ব্যবহৃত হয় ‘আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজ’ প্রতিষ্ঠার নামে আদায়কৃত অনুদানের অর্থ। এছাড়াও, ডিবি হারুনের চাঁদাবাজি থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আবদুল হামিদ এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বিক্ষোভকারীরা কিশোরগঞ্জের হাওরে তার নির্মিত প্রাসাদে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাটের এই অভিযোগগুলো তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ একাধিক সংস্থা।