বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বাংলাদেশের একজন বলিষ্ট এবং দক্ষ রাজনীতিবিদ। তবে বর্তমান সময়ে তিনি বেশ কিছুটা আলোচনায় রয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে সপরিবারে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করার পর। তবে তিনি আ.লীগের সাথে রাজনীতি না করলেও তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করার কথা জানালেন। এই দিক থেকে তিনি ঠিক কোন পথে রাজনীতির পথে হাটছেন সে বিষয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, আমরা এমপি মন্ত্রী হওয়ার জন্য কিংবা টাকা কামানোর জন্য দল করিনি। মানুষের সেবা ও পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা একটি দল গঠন করেছি। এখন লুটপাটের সময়। সেজন্য অনেকেই ভাবতে পারেন, আমাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন করা, এমপি হওয়া, সরকারে যাওয়া। অনেকে মনে করেন, সরকারের কাছে না গেলে কিছুই করা যায় না, ক্ষমতা হাতে না থাকলে কিছুই করা যায় না। আমি এ ধরনের রাজনীতি কখনো করিনি, ভবিষ্যতেও যে কখনো করবো এইটা গ্যারান্টি দিয়ে কেউ বলতে পারবে না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবন সোনার বাংলা কমিউনিটি সেন্টারে কৃষক শ্রমিক জনতালীগের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিও আওয়ামী লীগ করে। তবে আওয়ামী লীগ যদি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করত তাহলে যারা বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া তুলেছে তাদের দলে রাখত না। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু প্রয়াত হয়েছিলেন, তার এই প্রয়ানের জন্য যারা রাস্তা তৈরি করেছিল তারা জাসদের গণবাহিনীকে মাথায় তুলতো না।
শাজাহান খানের কথা উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, তিনি এক সময় নৌমন্ত্রী ছিলেন। আওয়ামী লীগের কত লোককে হ”/ত্যা করেছে, কত মুক্তিযোদ্ধাকে হ”/ত্যা করেছে তার হিসাব নেই। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করলে আওয়ামী লীগ তাদেরকে নিতো না।
বঙ্গবীর কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার অনেক দূরত্ব রয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দলের, আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগ সত্যিই একটি বড় দল। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে গ্রাস করেছে। এর সুফল আওয়ামী লীগ গ্রহণ করছে। এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য করতে পারবে। যতদিন আমরা আওয়ামী লীগের চেয়ে ভালো সংগঠিত দল হতে না পারব ততদিন আমাদের চেয়ে আওয়ামী লীগের বেশি সুবিধা হবে।
জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হালিম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় কৃষক শ্রমিক জনতালীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক, কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরীন কাদের সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ বীর প্রতীক, সদস্য শামীম আল মনসুর সিদ্দিকী, মঞ্জুরুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রসংগত, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের আধিপত্য রয়েছে: আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে এবং ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি প্রধান বিরোধী দল। তবে কাদের সিদ্দিকের মতো রাজনীতিবিদদের দলগুলো এখনও রাজনীতিতে কোনো ভালো অবস্থানে যেতে পারেনি।