এবার জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগের পর পটুয়াখালীর আদালতে একটি নালিশি মামলা দায়ের হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হ’/ত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র করা, বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতা ঝাঁটা ঝুলানো, লাঠি নিয়ে আনন্দ মিছিল করা ও সেই সাথে রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ সংগঠিত করার অভিযোগে পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর দ্বিতীয় আমলি আদালতে এই মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানা গেছে। এছাড়া ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে বরিশাল আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ভাঙচুর করা, জাতির জনকের ছবি রাস্তায় এনে ফেলা এবং তারপর সেটাকে পদদলিত করার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
মোঃ জাহিদুল হক যিনি বাউফল উপজেলাধীন বাউফল সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন, তিনি বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে এই মামলাটি দায়ের করেন। মোঃ জামাল হোসেন যিনি আদালতের বিজ্ঞ বিচারক হিসেবে রয়েছেন তিনি মামলাটি গ্রহণ করেছেন। কিন্তু এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি কোন ধরনের আদেশ দেন নি। আগামী ১৯ ডিসেম্বর মহামান্য আদালত এ বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ মামলায় প্রথম ঘটনা দেখানো হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ৮টায় বরিশাল বিবির পুকুরের পশ্চিম পাড়, ঘটনার দ্বিতীয় তারিখ দেখানো হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টায় বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হলের উত্তর পাশে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। তৃতীয় ঘটনা দেখানো হয় একই দিন বেলা সোয়া ১২টায় এবং সর্বশেষ ঘটনা দেখানো হয় চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১২টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সর্বশেষ ঘটনার চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১২টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতাঝাটা লাগিয়ে আনন্দ মিছিল করেছি। তাতেই কিছু হয়নি,আর বাউফল আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা যারা আমার বিরুদ্ধ করে তাদের ডজন-খানেক খু’/ন করলেও অমার (আ.স.ম ফিরোজ এমপি) কোন ক্ষতি হবেনা’।
ওই দিন বাদী সেখানে উপস্থিত থেকে এই কথা শুনে শিউরে ওঠেন এবং পরবর্তীতে তিনি ৭৫ সালের সেই ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এর পর গত ১২ ডিসেম্বর বাউফল থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ৭৫’র বরিশাল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আলতাফ হোসেন ভুলু, বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিমউদ্দিন ফরাজীসহ ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এদিকে বাদী পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম।
অভিযুক্ত সাবেক চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপি মামলার বিষয়ে বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে এ বিষয়টি নিয়ে কোন ধরনের বক্তব্য দিতে চাইছি না। আমি ৪০ বছর ধরে জাতীয় সংসদে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যেটা করা হয়েছে সেটা ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয। কে বা কারা এই মামলা দেয়ার পেছনে জড়িত রয়েছেন সেটা আমাদের নেত্রী ভালো করেই জানেন। বর্তমানে একটি নতুন মহল রাজনীতিতে এসেছে যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়য’ন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা খু’/ন’খারাপি সহ এই এলাকার রাজনৈতিক অবস্থাকে একটি অশান্ত পরিস্থিতিতে সৃষ্টি করেছে। এসব করে কোন ভাল ফলাফল পাবে না।”