বাংলাদেশ ( Bangladesh ) হলো একটি গণতান্ত্রিক একটা দেশ। আওয়ামী লীগ ( Awami League ) ও বিএনপি ( BNP ) এই এদেশের দুইটা প্রধান রাজনৈতিক দল। এছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে। এসব রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তাদের বিরোধী দলীয় কর্মীদের ইঙ্গিত দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আলোচনা ও সমালোচনা করে থাকে যেগুলো আসলে খুব তিক্তকর আবার হাস্যকরও হয়ে থাকে। সম্প্রতি এমনি একটা ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলাতে। চেয়ারম্যান সংসদ সদস্যের বাবা ও চাচাকে তার সামনেই ‘কুখ্যাত রাজাকার’ বলেছেন।
কুমিল্লা-৮ ( Comilla-6 ) আসনের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরীর ( Nasimul Alam Chowdhury ) বাবা কুট্টু মিয়া ( Kuttu Mia ) ও চাচা শামসুল আলম মিয়াকে তার সামনেই ‘কুখ্যাত রাজাকার’ বলে সম্বোধন করেছেন বরুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এন এম মইনুল ইসলাম। ( NM Moinul Islam. ) শনিবার ( Saturday ) বরুড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমন সম্বোধন করেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী। উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্য চলাকালে তিনি মঞ্চেই বসে ছিলেন। বক্তব্য শেষে হাততালির শব্দও শোনা যায়। শনিবার ( Saturday ) বিকেলে তার বক্তব্যের এমন একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বরুড়া উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তব্যের একটি অংশে উপজেলা চেয়ারম্যান এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, বরুড়ার ( Baruda ) মাটিতে যার নেতৃত্বে রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী গঠন করা হয়েছিল তিনি হলেন আদ্রা ( Adra ) ইউনিয়নের বিতর্কিত কুট্টু মিয়া ( Kuttu Mia )। কুট্টু মিয়া ( Kuttu Mia )র ভাই সিএসপি অফিসার শামসুল আলম মিয়া, যার নাগরিকত্ব দেশ বিরোধী অবস্থানের কারণে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু বাতিল করেছেন। অথচ যাকে আজ অতিথি করা হয়েছে, তিনি আর কেউ নন সেই কুট্টু মিয়া ( Kuttu Mia )র ছেলে শামসুল আলম মিয়ার ভাতিজা নাছিমুল আলম চৌধুরী। যে স্বাধীনতা বিরোধীরা মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে, ভাইদের পাখির মতো গু/’লি করে মে’/রেছে, শহীদদের রক্তে রঞ্জিত যাদের হাত, সেই রাজাকার পুত্রের হাতে সংবর্ধনা দেওয়া হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার ( Freedom fighters ) সন্তান হিসেবে আমি কীভাবে মেনে নেব!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এন এম মইনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি অবশ্যই সত্য। তার চাচার নাগরিকত্ব বঙ্গবন্ধু বাতিলই করে দিয়েছেন। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, সে কারণে এটি আমাদের নলেজে আছে। মুক্তিযোদ্ধা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন ( Muktijoddha Welfare Foundation ) কর্তৃক প্রকাশিত এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বইয়ের ৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় এর প্রমাণ আছে। কুমিল্লা-৮ ( Comilla-6 ) আসনের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী বলেন, যাকে রাজাকার বলা হয়েছিল, তিনি আমার বাড়ির সম্পর্কে চাচা হন। আমার বাবার বিষয়টি মিথ্যাচার। এটা আমার বক্তব্যে পরিষ্কার করেছি।
প্রসঙ্গত, আসলে যে যাই করুক না কেনো তার কর্মফল একদিন না একদিন তাকে ভোগ করতেই হবে। মানুষ সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে হোক অনেক অন্যায় করে থাকে জীবনে। পরে যখন সে ভুল বুঝতে পেরে প্রায়শ্চিত করে তখন তাকে ক্ষমা করা উচিত। এমন কোনো কাজ করা উচিত না যাতে কেউ মনে কষ্ট পায়। মানুষ ভুল করবেই এইটাই স্বাভাবিক তবে আমাদের উচিত তার ভুলটা ধরিয়ে দিয়ে তাকে সংশোধন করার ও ভালোর পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।