বগুড়া জেলায় অবস্থিত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ওয়ার্ডবয় ঘটিয়েছেন অমানবিক কান্ড যার কারনে একজন রোগীর মৃত্যু হয়। বকশিশের টাকা কম দেওয়ার কারনে তিনি এই ধরনের কান্ড করেন। টাকা কম পেয়ে তিনি রোগীর অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেয় এরপর প্রয়াত হন ঐ রোগী। ঘটনার পর ঢাকা থেকে ওয়ার্ডবয় ধলুকে আটক করেছে র্যাবের একটি দল। আজ বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মো. ইমরান খান যিনি র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের সহকারী পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তিনি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বগুড়াতে চা’ঞ্চল্যকর ও আলোচিত বকশিশ হিসেবে কম টাকা দেওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়ার পর বগুড়ায় এক রোগীর প্রয়ানের ঘটনায় গত রাতে ঢাকা থেকে ওয়ার্ডবয় ধলুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় চাহিদামত বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন খুলে দেওয়ায় সড়ক দুর্ঘ’টনায় গু’রুতর আ’/হ’ত বিকাশ চন্দ্র নামে এক রোগীর প্রয়াত হন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ওয়ার্ড বয় পলা’তক ছিল।
হাসপাতাল ও নি’/হ’তের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিকাশ চন্দ্র গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় সাঘাটায় মোটরসাইকেল দুর্ঘ’টনায় আ’/হ’ত হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড বয় আসাদুর রহমান ধলু তাকে স্ট্রেচারে করে ৩য় তলায় সার্জারি বিভাগে নিয়ে যান এবং ৫০০ টাকা দাবি করেন। কিন্তু তার কাছে কোনো টাকা না থাকায় বিকাশের বাবা বিশু দাস ১৫০ টাকা দিতে চাইলেও তিনি আরও ৫০ টাকা দাবি করেন। ওয়ার্ড বয় রে’গে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে। এর পরপরই শ্বাসকষ্ট আরম্ভ হয়।
এমতাবস্থায় তাকে অক্সিজেন লাগানোর জন্য অনুরোধ করে রোগীর আপনজনেরা কিন্তু টাকা না দেওয়া হলে অক্সিজেন মাস্কা লাগানো হবে না বলে জানান ঐ ওয়ার্ডবয়। তখন রোগীর আপনজনেরা নিজেরাই রোগী বিকাশের মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু যে সময় বিকাশের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে বুঝতে পারে সেই সময় তিনি পুনরায় অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেন। কিন্তু সেই সময় বিকাশ নিঃশ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থা দেখার পর ঐ ওয়ার্ডবয় সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন এবং পালিয়ে যান। পরবর্তীতে চিকিৎসক আসার পর রোগীকে প্রয়াত ঘোষণা করেন।