ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে কথা বলায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আসিফ মাহতাবকে বরখাস্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর পাদদেশে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ‘বিতর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তন ও হিজড়াদের প্রচারের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলের আগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ব্র্যাক তুমি একটা এনজিও। বাংলাদেশের মানুষের পয়সা দিয়া এর (সমকামিতার) বিরোধিতা করার জন্য চাকরিচ্যুত করবা? সেটা হবে না। যদি আসিফ স্যারকে ব্র্যাক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়, তবে আমরা ব্র্যাকের গেটে অবস্থান করব। আপনারা করবেন কি না আমি জানি না, তবে আমি করব। দেখব কীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপরও যদি ব্র্যাক আমাদের কথা মানতে বাধ্য না হয়, বাংলাদেশের জনগণ ব্র্যাকের প্রত্যেকটা ইট খুলে ফেলবে। শুনলাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সরোয়ারকেও নাকি চাকরিচ্যুত করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত মুসলমানদের ইতিহাস শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আবু বকর (রা) এর ইতিহাস ছিল ওমরের ইতিহাস ছিল। ড. শহিদুল্লাহর হাজারও গল্প ছিল। কিন্তু এগুলোকে আজ বিলীন করা হচ্ছে। ওরা (ভারত) জানে কাঁটাতারের বেড়াই বড় সীমান্ত নয়, এদেশের বড় সীমান্ত হলো মুসলমান। যদি এদেশের মুসলমানকে নষ্ট করা যায়, তাহলে কাঁটাতারে বেড়া থাকবে না। এপার বাংলা ওপার বাংলা এক হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আপনারা ধরে নিচ্ছেন বাংলাদেশে যে আইন পাস হয়েছে- সেখানে বিয়ের বন্ধন নেই। সব সমকা” মী, সব নারী-নারী; পুরুষ-পুরুষ। তাহলে এই দুনিয়া থাকবে? প্রজন্ম হবে কীভাবে আমাকে বলুন? ধরে নেন ইসলাম-ঠিসলাম পরে, ধর্ম পরে। আমি আপনার আইন মেনে নিলাম। বাংলাদেশের শতভাগ মানুষ আপনাদের আইন অনুযায়ী কাজ শুরু করেছে। পরবর্তী প্রজন্ম কি হবে? কি হবে এই দেশের? এটা কি কখনো আপনার মনে হয়েছে? এটা কি আপনি কখনো চিন্তা করতে পেরেছেন? এটাও আইন হয়? একটা মানুষ খারাপ কাজে লিপ্ত হয়, সেটা ভিন্ন কথা। দুনিয়ার আবহমানকাল থেকে খারাপ হচ্ছে, সেটার বিচারও আছে। আর আজকে অবৈধকে আইনের রূপ দেওয়া, জানোয়ারের চেয়েও খারাপ। এর চেয়ে বড় খারাপ আর কিছু হতে পারে না। অবৈধ অবৈধই, কিন্তু অবৈধকে বৈধতা দেওয়া যায় না। অবৈধকে বৈধতা সেই ব্যক্তি দেয়, যার ব্রেইন বলতে আর কিছু থাকে না।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সাহসিকতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২২ জানুয়ারি সীমান্তে আমাদের একজন বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। এদেশে সরকার কী, বলুন। ভারতের ক্ষমতা থাকলে চীনের দিকে একবার গুলি করুক। পাকিস্তানিদের মারার দরকার নাই, শুধু একটা গুলি চালাক। পাল্টা জবাবে ১০ রাউন্ড গুলি চালাবে পাকিস্তান। শট চীনের দিকে গেলে তারা পুরো এলাকা দখল করে নেয়। বাংলাদেশ কি স্বাধীন? বিজিবি সদস্যকে হ”ত্যা, বিজিবি এখন কোথায়? তাদের একটাই পোশাক। তাদের একটাই জুতা। ওদের ভেতরে মনুষ্যত্ব সেই। ওদের ভেতর হিম্মত-সাহস নেই। সব ধ্বংস করে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার বারবার হেলিকপ্টার-বিমান নিয়ে আমাদের দেশের সীমান্ত অতিক্রম করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু বলার নেই। তুমি ওই মেট্রোরেল চিবিয়ে খাও, তুমি পদ্মা সেতু ভেঙে খাও, তুমি টানেলে চলো। যদি বুক ফুলিয়ে হাঁটতে না পারি, সত্য কথা বলতে না পারি, মারা যাওয়া উচিত। বেঁচে থাকা উচিত নয়। মুর্দারের মতো বেঁচে থেকে লাভ নেই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ প্রমুখ।