Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / National / ফ্রিল্যান্সার রেমিট্যান্সে ১০ শতাংশ উৎসে কর আদায়ে কড়া নির্দেশনা

ফ্রিল্যান্সার রেমিট্যান্সে ১০ শতাংশ উৎসে কর আদায়ে কড়া নির্দেশনা

দেশে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের কারণে ফ্রিল্যান্সিংয়ে তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে। এখানে ১ মিলিয়নেরও বেশি লোক কর্মরত, এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।

নতুন আয়কর আইনে ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের বিপরীতে উৎসে ১০ শতাংশ কর কর্তনের বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগ বুধবার ওই বিধান পালনের জন্য সার্কুলার জারি করে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে।

তবে এ নির্দেশনা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। সেই সঙ্গে আইনি মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

রাজধানীর মিরপুরে একটি ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান অ্যানিমেশন স্টুডিও। প্রায় ২৫০ ফ্রিল্যান্সার এখানে কাজ করে। জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও আসাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আসলে আমরা ডলারের বর্তমান দর থেকে ২ টাকা কম পাচ্ছি। তারপর আবার যদি রেমিটেন্সের ওপর ১০ শতাংশ উইথহোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হয়। আমরা এনেছি, এটি রেমিট্যান্স প্রবাহে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই কষ্টার্জিত রেমিটেন্সের টাকা দেশে আনবে না। দুঃসময়ে রেমিট্যান্সকে উৎসাহিত করার কথা থাকলেও অতিরিক্ত কর আরোপ করে রেমিটেন্সকে নিরুৎসাহিত করা ঠিক নয়। তাহলে অনলাইনে লেনদেন হবে, হুন্ডিতে টাকা আসবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন কর অঞ্চল-১১ বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার জারির আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে অবহিত করে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। মূলত, রেমিট্যান্স থেকে কর কর্তনের বিধান এবং এনবিআর-এর উৎস আদেশে কর কর্তনের এখতিয়ার অনুযায়ী, বাংলাদেশে ধার্যকৃত সমগ্র কর ট্যাক্স জোন-১১-এর এখতিয়ারভুক্ত।

বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, আয়কর আইনের ১২৪ ধারায় উৎসে কর কর্তন করা হয়েছে এবং নির্ধারিত কোডের অনুকূলে দাখিল করা হয়েছে। নির্ধারিত কোড জমা দিতে ব্যর্থ হলে আয়কর আইনের ১৪৩ ধারার অধীনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আয়কর আইন অনুসারে, ফি, সার্ভিস চার্জ বা পারিশ্রমিক বা রাজস্ব ভাগের মাধ্যমে কাজের বিনিময়ে বিদেশে পাঠানো অর্থ প্রদান বা জমা করার জন্য দায়ী ব্যক্তি হিসাবে ব্যক্তি হিসাবে ১০ শতাংশ হারে কর কর্তন করতে হবে। গ্রহীতা হিসাবে অর্থ প্রদান বা জমা করার সময় অর্থ প্রদান বা জমা করা। . এর মধ্যে রয়েছে – বাংলাদেশে প্রদত্ত যেকোন পরিষেবা প্রদান, বিদেশী ব্যক্তিকে পরিষেবা প্রদান এবং বিজ্ঞাপন বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে কোন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলো স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগ করলে খরচ বেশি পড়ে। অনেক সময় তারা চাহিদা মতো কর্মীও পায় না। তারা তখন বাইরে থেকে কাজ করিয়ে নেয়। এটি সেই সংস্থা বা ব্যক্তির জন্য যেমন অর্থ সাশ্রয় করে, তেমনি সেই ব্যক্তি যে কোনও জায়গা থেকে কাজ করে উপার্জনও করে। সেজন্য বাসা থেকে বা যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করা সম্ভব। আপনার যা দরকার তা হল দক্ষতা, বিদ্যুৎ এবং একটি ইন্টারনেট সংযোগ।

অনলাইন শ্রমবাজার বা ফ্রিল্যান্সিং খাতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বিশ্বের এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের শেয়ার প্রায় ১৬ শতাংশ। তবে এই সেক্টরের কর্মী হিসেবে সারা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও আয়ের দিক থেকে এর অবস্থান ৮ম। বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের। তাই এই বাজার আরও সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।

About Zahid Hasan

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *