ফ্রিল্যান্সিং খাতে ১০ শতাংশ উইথহোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সিং খাত করমুক্ত।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে গুলশানের একটি হোটেলে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘বিএফএসআই ক্লাউড অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি’ বিষয়ক এই কর্মশালার আয়োজন করে ফেলিসিটি ইন্টারনেট ডেটা সেন্টার।
পলক বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের ওপর ১০ শতাংশ কর দিতে হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এ ঘোষণা দেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের বিপরীতে উৎসে কর ১০ শতাংশ কর্তনের বিধান রেখে এর আগে পাস হওয়া নতুন আয়কর আইন বাস্তবায়নের নির্দেশনা জারি করেছিলো। এরপর গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করার পর সমালোচনা শুরু হয়। এবিষয়ে সুখবর দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়, আয়কর আইনের ১২৪ ধারায় নির্ধারিত কোড অনুযায়ী উৎসে কর কেটে জমা দিতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত কোড জমা দিতে ব্যর্থ হলে আয়কর আইনের ১৪৩ ধারার অধীনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়কর আইন অনুযায়ী, ফি, সার্ভিস চার্জ বা পারিশ্রমিক বা রাজস্ব ভাগের মাধ্যমে কাজের বিনিময়ে বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থ প্রদান বা জমা করার জন্য দায়ী ব্যক্তি হিসাবে একজন ব্যক্তি হিসাবে ১০ শতাংশ হারে কর কর্তন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশে প্রদত্ত কোনো সেবা, কোনো বিদেশি ব্যক্তিকে পরিষেবা প্রদান এবং বিজ্ঞাপন বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহারের অনুমতি প্রদান।
তবে এ নির্দেশনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন খাতের সংশ্লিষ্টরা। এতে ফ্রিল্যান্সিং খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। সেই সঙ্গে আইনি মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অনলাইনে লেনদেন হবে, হুন্ডিতে টাকা আসবে।
অনলাইন শ্রমবাজার বা ফ্রিল্যান্সিং খাতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বিশ্বের এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের শেয়ার প্রায় ১৬ শতাংশ। তবে এই সেক্টরের কর্মী হিসেবে সারা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও আয়ের দিক থেকে এর অবস্থান ৮ম। বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের। তাই এই বাজারকে আরও সম্প্রসারণের জন্য আয়ের বিপরীতে উৎসে ১০ শতাংশ কর কর্তনের বিধান বাতিল করতে হবে।