বাংলাদেশের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সিরিয়ালের অসংখ্য নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন নাটকের জন্য জন্য এবং অভিনয়ের যে নিপুণতা সেটা তিনি বড় পর্দায় দেখাতে সক্ষম হয়েছেন ইতিমধ্যে তিনি একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন এবং সেখানে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত নন যত আলোচনা-সমালোচনা সবকিছুকে তিনি পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছেন আপন মহিমায়
অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে ঘনিয়ে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই ঘোষণা হবে বিশ্বখ্যাত কান উৎসবের আঁ সার্তে রিগায় বিভাগের পুরস্কার। যেটি থেকে চূড়ান্ত স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিদার বাংলাদেশের আজমেরী হক বাঁধন ওরফে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-ও।
কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের এই সিনেমাটি লড়াই করছে এবারের আয়োজনে। ৭ জুলাই সাদ-বাঁধন টিমের উপস্থিতিতে ছবিটির প্রথম প্রিমিয়ার হয় সেখানে। এরপর থেকেই কান নদীর তীরে ভাসছে রেহানার নাম।
ইতোমধ্যে হলিউড রিপোর্টার, এনডিটিভি, ভ্যারাইটি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, স্ক্রিন ডেইলিসহ আন্তর্জাতিক বেশিরভাগ গণমাধ্যমের শিরোনামে এসেছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর প্রশংসা।
কান থেকে শুক্রবার (১৬ জুলাই) আজমেরী হক বাঁধনকে আগাম শুভেচ্ছা জানাতেই বললেন, ‘আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। জানি না কী আছে ভাগ্যে। তবে পুরস্কার না পেলেও আমার আক্ষেপ নেই। কারণ, এ পর্যন্ত যা যা পেয়েছি তার সবটুকুই আশাতীত ছিল। তবু দেশের সবার কাছে দোয়া চাই আমাদের জন্য, যেন শেষ হাসিটাও হাসতে পারি। তবে আবারও বলছি, পুরস্কারটি না পেলেও আমাদের দুঃখ নেই। কারণ, আমরা সবার যে ভালোবাসা পেয়েছি সেটা কোনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির মাধ্যমে মিলবে না।’
উৎসবের ৭৪তম আসরে বাংলাদেশের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ১৯টি চলচ্চিত্র মনোনয়ন পেয়েছে এই বিভাগে। কান কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় কান শহরের পালে দো ফেস্টিভ্যাল ভবনের দেবুসি থিয়েটারে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
আঁ সার্তে রিগা বিভাগে নির্বাচিত ১৯টি চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে জুরি প্রাইজ, প্রাইজ ফর বেস্ট পারফরম্যান্স, প্রাইজ ফর বেস্ট ডিরেক্টর, স্পেশাল জুরি প্রাইজ ও জুরি স্পেশাল মেনশন বিভাগে পুরস্কার দেওয়ার কথা রয়েছে।
ছবিটির প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্মাতা জানান, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এই সিনেমার গল্প। যেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন। এরমধ্যে এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরোনোর সময় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হন রেহানা।
এরপর থেকে তিনি এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন এবং ক্রমশ একরোখা হয়ে ওঠেন। কিন্তু একই সময়ে তার ৬ বছর বয়সী মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায় বিচারের খোঁজ করতে থাকেন।
১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট ব্যাপ্তির ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন আজমেরী হক বাঁধন। এছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে আছেন সাবেরী আলম, আফিয়া জাহিন জায়মা, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, কাজী সামি হাসান, ইয়াছির আল হক, জোপারি লুই, ফারজানা বীথি, জাহেদ চৌধুরী মিঠু, খুশিয়ারা খুশবু অনি, অভ্রদিত চৌধুরী।
নির্মাতা সাদ ২০১৬ সালেই নিজের জাত চিনিয়েছেন ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ চলচ্চিত্র দিয়ে। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ তার দ্বিতীয় নির্মাণ।
পোটোকল ও মেট্রো ভিডিও’র ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া, নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু এবং সহ-প্রযোজনা করেছেন রাজীব মহাজন, আদনান হাবিব ও সাঈদুল হক খন্দকার। ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফার তুহিন তমিজুল, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জ্বল ও সাউন্ড ডিজাইনার শৈব তালুকদার। ছবিটি সহ-প্রযোজনা করেছে সেন্সমেকারস প্রডাকশন।
এর আগে ২০০২ সালে কান উৎসবে বাংলাদেশের মুখ খানিকটা উজ্জ্বল করেছিলেন তারেক মাসুদ। সে বছর তার ‘মাটির ময়না’ ছবিটি ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট বিভাগের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। যদিও সেটি কানের অফিসিয়াল সিলেকশন নয়।
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন একের পর এক নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন ছোটপর্দায় তার অভিনয় নৈপুণ্য তার প্রশংসা করেছে অনেকেই সেই সাথে তিনি অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন অনন্য পর্যায়। ছোটপর্দায় আজ সেই ধারাবাহিকতায় তিনি বড় পর্দায়ও বজায় রেখেছেন এবং অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের থেকে ব্যাপক প্রশংসা এবং ভালোবাসা অর্জন করে নিয়েছেন