সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়া এবং দেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে ২০১৬ সালের একটি চাঁদাবাজির মামলায় বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতও তার জামিন আবেদন খারিজ করেছিলেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি।
গ্রেপ্তার ও অভিযোগ:
গত ১৪ আগস্ট ভোর রাতে বরগুনার আমতলা এলাকায় নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের একটি দল ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে আলাপের পর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয় এবং ৯ অক্টোবর আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ফোনালাপের প্রসঙ্গ:
১২ আগস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে তিন মিনিটের একটি ফোনালাপে জাহাঙ্গীর কবির তাকে বলেন, “আপা, আপনি ঘাবড়াবেন না। আমরা শক্ত আছি। আপনি ঘাবড়ালে আমরা দুর্বল হয়ে পড়ি।” জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ভয় পাইনি। দেশ রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। আপনারা শৃঙ্খলা মেনে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন।”
এই ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে বিতর্কের জন্ম দেয়। শেখ হাসিনা তখন দলীয় কর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশনা দিলেও, জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ আনা হয়।
বিচারকের পর্যবেক্ষণ:
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হেমায়েত উল্লাহ জানান, জাহাঙ্গীর কবির আইন অনুযায়ী ৬০ দিনের পর জামিন আবেদন করেন, তবে এটি যথাযথ না হওয়ায় হাইকোর্ট জামিন নামঞ্জুর করেন।
অন্যান্য মামলা:
জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা চলমান রয়েছে। এসব মামলায়ও তিনি বরগুনা জেলহাজতে আটক রয়েছেন।