ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে বিশ্ব নেতারা দুই ভাগে বিভক্ত। বিশেষ করে ইসরায়েলি হামলার সমালোচনা করছেন বিশ্বের মুসলিম নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন নিয়ে বিতর্কিত টুইট করে সমালোচনার মুখে পড়েন ইসলামী বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। ইসলামিক বক্তা হিসেবে তার পোস্ট তার ভক্তরাভালোভাবে গ্রহণ করেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
যদিও আজহারী পরে তার ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে ব্যাখ্যাও করেছেন। কিন্তু সেখানেও নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে বিখ্যাত ইসলামিক বক্তাকে। এ সময় মিজানুর রহমান আল আজহারী অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রশ্ন ছাড়াই, ফিলিস্তিন ইস্যু আমাদের হৃদয়ের ইস্যু, ঈমানের ইস্যু। আমৃত্যু আমরা আকসাকে হৃদয়ে ধারণ করব ইনশাআল্লাহ।
মালয়েশিয়ার জনপ্রিয় প্রবাসী বক্তা মিজানুর রহমান আল আজহারী বুধবার সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ একটি টুইট করেছেন। তিনি উভয় পক্ষের নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে সহিংসতার সমালোচনা করেন। আজহারির মন্তব্য অনেক সমর্থককে ক্ষুব্ধ করেছে। তারা ধরেই নেন, গেল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা অপারেশন আল আকসা ফ্লাড নামের যে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন, তার সমালোচনা করেছেন আজহারি। যা মেনে নিতে পারছেন না তার ভক্তরা। কারণ সরাসরি না বললেও মোটাদাগে আজহারির টুইটের অর্থ দাঁড়ায়, নিরপরাধ মানুষের জীবনকে হুমকিতে ফেলার জন্য ফিলিস্তিনিদের ওই হামলা দায়ী।
আজহারী উভয় পক্ষকে যেকোন সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি অবিলম্বে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দাবি করেন। ইসলামিক বক্তা টুইটে আরও উল্লেখ করেছেন যে মুসলিম ও ইহুদিদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।
আজহারির এই টুইটের পরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। সমালোচকরা এই টুইটটিকে ইসরায়েলের অপপ্রচারের ইঙ্গিত বলে মনে করেছেন। জনপ্রিয় এক লেখক প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আজহারি সাহেব কি মাদখালিজমের দীক্ষা নিয়েছেন? নাকি ইসরায়েলি লবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন?’ ফেসবুকে আরেকজন লেখেন, একজন ব্যক্তির ভেতরকার সত্যিকার চরিত্র বা ব্যক্তিত্ব কোনো না কোনো সময়ে প্রকাশিত হবেই। অপর একজন ফেসবুকে লেখেন, আজহারীর উত্থান ধর্ম-ব্যবসায়ী হিসেবে। কেউ কেউ আবার তাকে সুবিধাবাদী বলেও মন্তব্য করেন।
এদিকে এক্সের সমালোচনার মুখে মিজানুর রহমান আজহারী তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন যে ব্যক্তিগতভাবে তিনি কখনোই টুইটার চালান না। তিনি শুধুমাত্র তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ চালান। তিনি বিতর্কিত টুইটটিকে বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করে মুছে ফেলতে বলেছিলেন। এ সময় মিজানুর রহমান আল আজহারী অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
যদিও নেটিজেনদের এই ব্যাখ্যার সমালোচনাও করতে দেখা গেছে। এ ধরনের ভুল যাতে আর না হয় সেজন্য কেউ কেউ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এই ইসলামি বক্তাকে।