সিলেটে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণে দগ্ধ নয়জনের অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাদের সবাইকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।
তাদের শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, দগ্ধ নয়জনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ওসমানী হাসপাতালের চতুর্থ তলার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে দগ্ধ পাঁচজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলো। তাদের শরীর ফুলে ও কালো হয়ে গেছে। চিকিৎসাধীনরা হলেন সুনামগঞ্জের বাদল দাস (৪০), উৎপল দাস (৪০), রিপন মিয়া (৩২), নজরুল ইসলাম মুহিন (৪২) ও সিলেটের তাজউদ্দিন আহমদ তারেক (৩২)।
দগ্ধ বাকি চারজন হাসপাতালের পঞ্চম তলায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তারা হলেন সিলেটের টুকের বাজারের মিনহাজ আহমদ (২৮), নগরীর চৌহাট্টার রুমান আহমদ (২৩), টুকের বাজারের রুমেল সিদ্দিক (২৮) ও ইমান আহমদ (৩২)।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, দগ্ধদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বাকিদের শরীরও ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ফলে সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া সবাইকে ঢাকায় পাঠাচ্ছি। তাদের ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হবে।
আহতদের স্বজনদের বুধবার ওসমানী হাসপাতালে ফোন করতে দেখা গেছে। নিহতরা সবাই দরিদ্র। ফলে চিকিৎসার খরচ নিয়ে চিন্তিত তারা। সিলেট জেলা প্রশাসন প্রত্যেক দগ্ধ ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা করে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে।
দগ্ধ উৎপল দাসের এক আত্মীয় জানান, রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে। এখন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু চিকিৎসার বিশাল খরচ কিভাবে বহন করবেন।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মাত্র ১০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আর কেউ টাকা দেয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর মিরাবাজার এলাকায় পাওয়ার সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ফিলিং স্টেশনের সাত কর্মচারী ও দুই পথচারী দগ্ধ হন।
আগুনের খবর পেয়ে সিলেট তালতলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, পাম্প বন্ধ থাকার সময়ও পাওয়ার সিএনজি ফিলিং স্টেশনটি খোলা ছিল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফিলিং স্টেশনের কম্প্রেসার রুমের একটি সেফটি বাল্ব বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এ সময় কম্প্রেসার মেশিনসহ আশপাশের যন্ত্রপাতিতে আগুন ধরে যায়।
সিলেট ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার বেলাল আহমদ বলেন, ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি রয়েছে। এর ফলে আগুন লেগেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে হবে।
তবে ফিলিং স্টেশনের ইনচার্জ আফতাব আহমেদ লিটন জানান, সন্ধ্যার পর গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সবাই অনুষ্ঠান শেষ করে পাম্প বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। চেক করার সময় কম্প্রেসার রুমের একটি বাল্ব বিস্ফোরিত হয়।
তিনি আরও বলেন, দগ্ধদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।