ভালো জিনিস এবং সুখের জন্য যেকোনো সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা হল ভালোবাসা। ভালবাসা সবসময় ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছেড়ে দেওয়ার উপর ভিত্তি করে। প্রেম একটি বাহ্যিক কারণ সঙ্গে আনন্দ ছাড়া কিছুই নয়। ভালবাসা একতরফা এবং তা নিজের মধ্যে, অন্য কোথাও নেই। এভাবে প্রেম সম্পর্কে অসংখ্য মতবাদ রয়েছে। প্রেমের জন্য বাড়ি ছেড়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশে ( Bangladesh ) প্রেমের টানে আসা এক যুবকের গল্প ভাইরাল হয় যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে।
ভালোবাসার কাছে সবকিছুই তুচ্ছ। ভালোবাসা মানে কোনো বাধা, কোনো ভৌগলিক সীমানা, ধর্ম, বর্ণ, কোনো কিছু নয়। তাই সুদূর যুক্তরাষ্ট্র ( Far United States ) থেকে বাংলাদেশে ( Bangladesh ) এসে বিয়ে করেছেন এক মার্কিন যুবক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়। এক বছর দেওয়া-নেওয়ার পর সুদূর যুক্তরাষ্ট্র ( Far United States ) থেকে বাংলাদেশে ( Bangladesh ) উড়ে এসে প্রেমিকাকে বিয়ে করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওই যুবকের নাম রায়ান কফম্যান। ( Ryan Kaufman. ) তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির কানসাস ( Kansas, Missouri, USA ) সিটির বাসিন্দা। প্রেমিকা সাইদা ইসলাম ( Saida Islam ) (২৮) মোশাররফ হোসেনের ( Mosharraf Hossain ) নাতনি ও গাজীপুর মহানগরীর বাসন ( Gazipur metropolitan dishes ) থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার প্রয়াত সিকান্দার আলীর ( Sikandar Ali ) মেয়ে।
রায়ান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার নিজ শহরে একটি প্লাস্টিক পণ্য কারখানায় অপারেটর হিসাবে কাজ করেন। মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার বাবা-মা ছাড়াও তার এক বড় ভাই আছে। তারা প্রত্যেকেই সেখানে আলাদাভাবে থাকেন।
কনের দাদা মোশাররফ হোসেন জানান, ঢাকার দোনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকান্দার আলী ২০১৯ সালে পরলোক গমন করেন। বাবার প্রয়াতের পর সাইদা তার মা ও ছোট বোনকে নিয়ে গাজীপুরে নানা মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানেই তারা এখন থাকেন।
সাইদা জানান, ২০২১ সালের এপ্রিলে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় রায়ান কফম্যানের সাথে প্রথম দেখা করেন। তারা ফোন নম্বর এবং ঠিকানা বিনিময় করেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। যোগাযোগ মাধ্যেমে ভিডিও কল এবং ফোন নম্বরে কথা বলার মাধ্যমে তারা ঘনিষ্ঠ হয়। এভাবেই দুজনের প্রেম হয়। প্রায় এক বছর ধরে যোগাযোগ মাধ্যেমে প্রেম করছেন তারা। শেষ পর্যন্ত দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। রায়ান বিয়ের জন্য খ্রিস্টান ধর্ম থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হন। পরে তিনি তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে চলতি বছরের ২৯ মে বাংলাদেশে আসেন। এই দিনেই প্রথম দেখা হয় দুজনের। সেখান থেকে সাইদাকে নিয়ে সোজা গাজীপুরে নানার বাড়িতে যায় রায়ান। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তারা।
রায়ান এখন গাজীপুরে মোশাররফ মাস্টারের বাসায় অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে আসার আগে রায়ান সাইদারের কাছে বিয়ের গয়না ও জামাকাপড়সহ মোবাইল ফোন কেনার জন্য টাকা পাঠায়। রায়ান বাংলাদেশে আসার আগে ওই টাকা দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সম্পন্ন করেন সাইদা।
এদিকে সুদূর আমেরিকা থেকে এক যুবক গাজীপুরে এসে স্থানীয় এক তরুণীর বিয়ের খবর শুনে উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমায়।
সাইদারের আত্মীয়স্বজন এবং বাংলাদেশিদের সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে রায়ান বলেন, বাঙালিরা খুবই অতিথিপরায়ণ। আমেরিকায় কেউ অপরিচিতদের সাথে বেশি কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে এসে দেখি সবাই আমার প্রতি অনেক আন্তরিক। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা খাবার এবং যত্ন নিয়ে খুব ব্যস্ত, যা আমেরিকায় বিরল।
রায়ান জানান, বিয়ের পর সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাবেন তিনি। তিনি বলেন, সঙ্গে থাকা নথিপত্র (কে-ওয়ান) এবং ভিসা প্রক্রিয়া করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। সব শেষ হলে সাইদাকে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেখানে তাদের পরিবার থাকবে।
ভালোবাসা নিয়ে কিছু কথা:- একজন ব্যক্তি অন্যের বাহ্যিক মোহে নিজের থেকে ভালবাসা অনুভব করে এবং তাকে প্রলুব্ধ করে। তাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যোগ্যতার বিচারে আরেকজনের কাছে আসে। সে ক্ষেত্রেও দুই জনের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্পর্ক থাকে। এমন ভালোবাসা কখনো শূন্যতা সৃষ্টি করে না। খুব বিরল ক্ষেত্রে এটি গভীর প্রেমের ভিত্তি হয়ে ওঠে। প্রেমে শূন্যতা তখনই থাকে যখন আত্মা একত্রিত হয় না। দুই আত্মা যখন সচেতনভাবে একত্রিত হয়, তখন জগতের অনেক কিছুই গৌণ হয়ে যায়।