Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ফের নতুন সমস্যার সূচনা: সারাবিশ্বে একটা দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি দেখতে পাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

ফের নতুন সমস্যার সূচনা: সারাবিশ্বে একটা দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি দেখতে পাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

সারাদেশের মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যে দাম বৃদ্ধি জনিত সমস্যা ভুগছে তখন বাংলাদেশে শুরু হয়েছে নতুন নতুন সমস্যার সূচনা। বাংলাদেশের সরকার সারাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সমস্যার সমাধানের জন্য দিন রার কাজ করে যাচ্ছে। তবে এতে কোনভাবেই সন্তুষ্ট হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। দেশে এমন পরিস্থিতি নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে কিছু সতর্কতা জারি করেছেন।

 

তিনি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচতে দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না হয় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

 

বৃহস্পতিবার ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের ২৪তম জাতীয় সম্মেলন ও ৪৩তম কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন থেকে কার্যত অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া রোগের কারনে বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাবের পরপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। সংকট কাটিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। আজ আমরা সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষের পদচারণা দেখছি, এর প্রভাব থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। তাই এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি থাকে না। তার জন্য যা সম্ভব তা তাকে উৎপাদন করতে দিন।

 

বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সর্বস্তরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও মনোনিবেশ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

তিনি বলেন, ‘আমি আবারও সবাইকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাই, যাতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সময় বাংলাদেশের জনগণকে কোনো দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। আমাদের নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে।’

 

সরকার প্রধান বলেন, কঠোরতা অর্জনের পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হওয়ায় দেশের জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। এখন থেকে আমাদের সকলকে মিতব্যয়ীতা অনুশীলন করতে হবে, সঞ্চয় করতে হবে এবং কখনই কোনো কিছুর জন্য অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে না। আর উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমরা যাতে সব সময় নিজেদের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ইউরোপের দেশগুলোর পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি সরবরাহে সমস্যায় পড়ছে, তারা সেখানে রেশন করছে। জল গরম করার সিস্টেমে তাদের সীমিত ব্যবহার রয়েছে। তাদের হিটিং সিস্টেম বন্ধ রাখতে হবে। তাই যেহেতু বিভিন্ন পণ্যের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে, সেহেতু আমাদেরকেও কঠোরতার চর্চা করতে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেশের সব ঘরে ঘরে আলোকিত করেছে, তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় খরচ কমাতে কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

উন্নয়ন প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেন, এ অবস্থায় যেসব প্রকল্প দ্রুত শেষ করা দরকার সরকার সেগুলো বাস্তবায়ন করবে। আমাদের পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা তা করতে পারলে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে, তরুণ প্রজন্মকে এখন থেকেই দক্ষ জনশক্তিতে গড়ে তুলতে হবে। দেশের জনশক্তিকে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। এ জন্য প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিশিষ্ট ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য আইডিইবি স্বর্ণপদক প্রদান করেন।

 

আইডিইবি স্বর্ণপদক পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হালিম বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুর করিম খান এবং বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আলী।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইডিইবি সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার একেএমএ হামিদ। সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শামসুর রাহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে আইডিইবির বহুমাত্রিক কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

 

প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ’ কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তিকাটির মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশল পরিষদ’ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে মুজিববর্ষের লোগোও হস্তান্তর করে।

 

দেশের চলমান অবস্থাকে আবারো স্থিতিশীল করার জন্য সারাদেশের মানুষের একত্র হয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তদের ধারনা, যতি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেত হবে তবে সকলকে অপচয় রোধ করতে হবে। অন্যথায় আগামী দিনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি হবে করুন।

 

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *