রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম এক লাফে অনেক বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত হারের চেয়ে ১২ টাকা থেকে ১৪ টাকা বেশি দামে মার্কিন মুদ্রা কিনছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে ডলার সংকট আরও তীব্র হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো মুদ্রা কিনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া মূল্য অনুযায়ী প্রতি ডলার রপ্তানি বা প্রত্যাবাসন আয়ের দাম ৫০ পয়সায় কেনা যাবে ১১০ টাকা। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তা কিনছে ১২২ থেকে ১২৪ টাকায়। তারা খোলা বাজারের (কার্ব মার্কেট) চেয়ে ডলার প্রতি বেশি দাম দিচ্ছে। খুচরা বাজারে ১ ডলার লেনদেন হচ্ছে ১২০ থেকে ১২১ টাকায়। তবে মুদ্রাবাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মানি এক্সচেঞ্জগুলো রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের দাম চেয়েছে ১২২ থেকে ১২৩ টাকা। ফলে ওই দামেই কিনতে বাধ্য হচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। তারাও আন্তর্জাতিক মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ‘ট্রান্সফাস্ট’ থেকে সর্বোচ্চ ১২৪ টাকা দামে ডলার কিনেছেন।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ‘ট্যাপট্যাপ’ থেকে মার্কিন মুদ্রা কিনেছে ১২৩ টাকা ৫০ পয়সায়। তারা একই হারে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ‘জিসিসি এক্সচেঞ্জ’ থেকেও সংগ্রহ করেছে।
খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের কাছে ডলার বিক্রি করছে ১২৪ থেকে ১২৫ টাকা দরে। স্বাভাবিকভাবেই, প্রধান বৈশ্বিক মুদ্রার বিনিময় হারে একটি বড় লাফ দেখা গেছে।
ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মাওলা বলেন, বড় ব্যাংক হওয়ায় আমাদের চাহিদা বেশি। বিদেশী মানি এক্সচেঞ্জ এখন প্রতি ডলার ১২৩-১২৪ টাকা চাইছে। সে অনুযায়ী আমরা রেমিট্যান্স কিনতে বাধ্য হচ্ছি।
এ অবস্থায় চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করবে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেডা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। এখন তারা মূলত ডলারের দাম নির্ধারণ করে। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে মুদ্রার দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, বর্তমানে যেভাবে ডলার নির্ধারণ করা হচ্ছে, নির্বাচন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকুক। দিন দিন এটি বাজারমুখী হয়ে উঠছে। এছাড়াও, ব্যাংকগুলিকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার ক্রয় বিক্রয় করতে দিন। এতে রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পর ডলারের দাম বাজারে ছেড়ে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সাময়িকভাবে দাম বাড়বে। কিন্তু পরে আবার কমবে।