নানা বাধা-প্রতিবন্ধকতার মধ্যদিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন শেষে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পর থেকেই শুরু হয় একের পর এক অপ্রত্যাশিত কাণ্ড। আর এরই জের ধরে বায়েজিদ তালহা নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মুহূর্তে কারাগারেই রয়েছেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় সিআইডির মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। বায়েজিদের মোবাইল ফোনের ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেলেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। এই মামলায় বায়েজিদ ও ভিডিও ধারণে তার সহযোগী কায়সার মামুন অভিযুক্ত হচ্ছেন।
চলতি বছরের ২৬ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরদিন বায়েজিদ সেতুর রেলিং থেকে নাট ও বোল্ট সরানোর একটি টিকটক ভিডিও প্রকাশ করেন। ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বায়েজিদকে ঢাকার মালিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর গত ২৭ জুন পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা করে সিআইডি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও মামলার তদন্ত পায়। বায়েজিদকে সাত দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেন তারা।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, বায়েজিদ ও তার বন্ধু ‘নেতিবাচক বিষয় তৈরি করতে’ এই ভিডিওটি করেছেন। তাদের দুজনকেই অভিযুক্ত করে রিপোর্ট করা হবে। বায়েজিদ বর্তমানে শরীয়তপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তার বন্ধু কায়সার মামুন পালিয়ে কাতারে অবস্থান করছে বলে তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত করেছে। কায়সারের বাড়ি সাভারের নালিয়াসুরের মুশুরিখোলা গ্রামে।
বায়েজিদকে শান্তিনগরের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার নামে নথিভুক্ত গাড়িও জব্দ করে সিআইডি।
তার কর্মকাণ্ডের পর বায়েজিদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর লাউকাঠি ইউনিয়নের তেলিখালীতে হামলা চালায় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। এরপর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দাবি করেন, বায়েজিদ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সিআইডি যা বলছে:
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পদ্মা সেতু নিয়ে নেতিবাচক ইস্যু তৈরি করতে বায়েজিদ ও তার বন্ধু ভিডিওটি তৈরি করেছেন। তবে বায়েজিদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তদন্তের সঙ্গে জড়িত একজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারের পর আমরা যে বৈদ্যুতিক ডিভাইস (মোবাইল) উদ্ধার করেছি সেগুলো ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন পেলে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এদিকে এ মামলার বিষয়ে জানতে সিআইডির এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্তে বেশ অগ্রগতি আছে। খুব শীঘ্রই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।