আমেরিকা থেকে সাকিবের ফেরার কথা থাকলেও আমার বন্ধু ফাতিহা আয়াত ফিরেছে! জনপ্রিয় শিল্পী হাউন আঙ্কেল নামে যাকে অনেক ট্রোল করা হয়েছিলো সেই সিমরিন লুবাবা ফাতিহা আয়াতের একটি ফেসবুক পোস্ট কপি করে তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন যা মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
পাঠকদের সুবিধার্থে আলোচিত সেই পোষ্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
অস্থায়ীভাবে চলে গিয়েছিলাম চার বছর বয়সে। স্থায়ীভাবে ফিরে এসেছি নয় বছর পর। পাসপোর্টটার দিকে চোখ পড়লেই ভেবেছি, বুঝি বাংলাদেশেই আছি। ভৌগলিকভাবে দূরে থাকলেও, হৃদয়টা ছিল বড্ড কাছাকাছি।
স্থায়ীভাবে কেন ফিরলাম? আমি মনে করি, আমাদের বাংলাদেশে #ReverseBrainDrain বাস্তবায়নের এখনই উপযুক্ত সময়। আমরা শিক্ষার জন্য বিদেশে যাব, কিন্তু শিক্ষা শেষে আমাদের কর্মক্ষেত্র যেন হয় মাতৃভুমি। অপরচুনিটি নিব গ্লোবালি, সার্ভিস দিব লোকালি।
আমার শিক্ষাজীবন এখনো পূর্ণতা পায়নি। যদিও আমি এরই মধ্যে হার্ভার্ড, এমআইটি আর জন হপকিন্স এর মত বিশ্বের প্রথম সারির তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে প্রফেশনাল লিডারশিপ, হায়ার ম্যাথমেটিক্স ও নিউক্লিয়ার রিএক্টরের উপর কোর্স করেছি — কিন্তু তারপরও বয়সের কারণে পড়ি যেহেতু মাত্র ক্লাশ এইটে, শিক্ষা সফরের বহু পথ এখনো বাকি।
তারপরেও আমি ফিরে এসেছি। গ্রাজুয়েশনের জন্য ইনশাআল্লাহ আবারো হয়তো বিদেশ বিভুইয়ে যাব, কিন্ত তার আগে ক্লাশ এইট-নাইন-টেন-ইলেভেল-টুয়েলভ এই পাঁঁচ বছর জাতিসংঘ সহ বিশ্বব্যাপী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করব বাংলাদেশে বসে, বাংলাদেশের জন্য।
কারণ আমার পরিবার আমাকে শিখিয়েছে, যুগে যুগে নানান পেশায় ওই সকল মানুষেরাই সফল হয়েছেন যাদের সকল ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা ছিল দেশের প্রতি। সে জন্যই আপনারা দেখেছেন আমি ক্রমাগত যুদ্ধ করে গিয়েছি
(১) আন্ত:সীমান্ত নদী থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্য পানির নায্য হিস্যা না দেয়ার প্রতিবাদে জাতিসংঘে;
(২) বাংলাদেশের একমাত্র জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটটি নিজস্ব অরবিটালে বসাতে না দেয়ার প্রতিবাদে নাসায়; আর
(৩) বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বাংলাদেশের সাস্টেইনেবল অ্যাডাপ্টেশন ও ক্লাইমেট মিটিগেশনের জন্য তহবিল না দেয়ার প্রতিবাদে জলবায়ু সম্নেলনে।
আমি আশা করব — রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত প্রবাসী শ্রমিক ভাই বোনেরা বাদে চিকিতসক, প্রকৌশলী, আইনজীবি, বিজ্ঞানী সহ পেশাজীবি সমাজের সকল বাংলাদেশী অভিবাসী ফিরে আসবেন নিজের মাতৃভুমির প্রতি দ্বায়িত্ব ও কর্তব্যের টানে৷ কর্মক্ষেত্র স্বদেশকে বেছে নিয়ে ঢেলে দিবেন স্বীয় যোগ্যতা ও দক্ষতার শেষ বিন্দুটিও।
আমি পারলে, আপনারাও পারবেন।
আমাকে এতদিন অনেকেই বলতেন, আমার সামান্য যা কিছু অর্জন তা নাকি সম্ভব হয়েছে কেবল আমি বাংলাদেশে থাকিনা বলেই। এদেশের পরিমন্ডলে বেড়ে উঠে নাকি বিশ্ব পরিসরে নিজের জায়গা তৈরী করে নেয়া যায় না। এবার সেই চ্যালেঞ্জটাই নিলাম। ইনশাআল্লাহ, শুধু যেকোন একটা জায়গা নয়, একেবারে শীর্ষস্থান খুজে নিব, বাংলাদেশকে সাথে নিয়েই।
আরেকটা কথা:
আমার ও আমার পরিবারের এই #ReverseBrainDrain এর সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আমাদের শুধু আবেগ কাজ করেছে, বিবেক নয় — এমনটা না ভাবাই ভালো।