দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করছেন, যা ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা হতে পারে। দলের সম্ভাব্য নেতৃত্বে থাকতে পারেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তবে দলটির নেতৃত্ব সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কিছু জানায়নি শিক্ষার্থীরা। নাহিদ ইসলাম কি উপদেষ্টা পদ ছেড়ে নতুন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নেবেন? এ প্রশ্নে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, “বিষয়গুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দলের নাম ও নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে। উপদেষ্টাদের কেউ যদি পদ ছেড়ে নেতৃত্বে আসতে চান, আমরা তাদের স্বাগত জানাব। তবে তারা এখনো সরকারের অংশ, তাই আমরা তাদের আলোচনায় ডাকছি না।”
তিনি আরও জানান, প্রথম পর্যায়ে কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগরের কমিটি গঠনের কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে নতুন দলের কমিটি গঠন করা হবে।
তবে নতুন দল গঠনের আলোচনা চলার মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। তাদের অভিযোগ, সরকারের উপদেষ্টারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রাজনৈতিক দল গঠনে সক্রিয় রয়েছেন, যা সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হলে উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
নতুন দলের লক্ষ্য হলো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে অন্যান্য মতাদর্শের মানুষকে একত্রিত করা। তবে অতীতে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কেউ দলে ঠাঁই পাবেন না।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী জানিয়েছেন, “আমরা ইতোমধ্যেই ৩২৮টি থানা কমিটি গঠন করেছি এবং অল্প সময়ের মধ্যেই এ কাজ সম্পন্ন হবে। নতুন দলটি চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সিন্ডিকেট এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।”
নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করেন এমন সবার জন্য আমাদের দলের দ্বার উন্মুক্ত। বিএনপি বা অন্য যেকোনো দলের সদস্যরাও যদি এই চেতনায় বিশ্বাসী হন, তবে তাদের স্বাগত জানানো হবে।”
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নতুন দলটি কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে, তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তবে নাগরিক কমিটির নেতারা আশাবাদী যে, নতুন দলটি দেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ করবে।