Sunday , November 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ফুরিয়ে আসছে মেয়াদ, বড় দুই চালেঞ্জের মুখে আওয়ামীলীগ

ফুরিয়ে আসছে মেয়াদ, বড় দুই চালেঞ্জের মুখে আওয়ামীলীগ

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে বিভিন্ন চেলেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে । বিশেষ করে পরপর তিন বার ক্ষমতায় থাকা আওয়ামীলীগ বেশি মুখে পড়তে হচ্ছে। কারন বিগত দুটি নির্বাচনের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। অন্যদিকে বিরোধী দল নির্বাচনকালীন সরকারে নিয়ে আন্দোলন করছে। এ বিষয় বৈশ্বিক চাপ রয়েছে। সামনে আওয়ামী লীগের দুই চ্যালেঞ্জ কথা উঠে এসেছে এ প্রসঙ্গে যে বিশ্লেষন উঠে এসেছে।

সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছে। নেতা-মন্ত্রীদের কথায় উত্তপ্ত হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গন। দেশি-বিদেশি প্রভাবশালীরাও বেশ সক্রিয়। পাশাপাশি চলমান বিশ্ব সংকটের আঁচ দেশের অর্থনীতিতে। এ অবস্থায় দলকে সুসংগঠিত করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ। তবে দলটির নেতারা বলছেন, চ্যালেঞ্জ অবশ্যই আছে, তবে তা কাটিয়ে ওঠার প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের।

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে বিএনপি। চলতি বছরের ২৪ মে সংলাপ শুরু হয়। প্রথম পর্বে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলন এবং সাইফুল হকের বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ হয়েছে।

পরে বিএনপি মহাসচিব ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাপ-ভাসানী, মুসলিম লীগ, সাম্যবাদী দল ও দলের সঙ্গে সংলাপ করেন। ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল)। দলটি সব বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ করবে। নিজেদের শর্তে ছাড় দিয়ে তারা সরকারবিরোধী জোটকে শক্তিশালী করতে চায়। পাশাপাশি রাজপথেও এরই মধ্যে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছে বিএনপি।

এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি প্রভাবশালীরাও বেশ তৎপর। গত ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল জে সিসন তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। তার সফরে যুক্তরাষ্ট্রের বহুপাক্ষিক অগ্রাধিকার যেমন খাদ্য নিরাপত্তা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবাধিকার, মানবিক চাহিদা, শান্তিরক্ষা এবং রোহিঙ্গাদের সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়।

একই দিনে (৬ আগস্ট) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ১৭ ঘণ্টার সফরে বাংলাদেশে আসেন। এদিকে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন।

বিশ্ব পরাশক্তির আলোচিত দুই দেশের প্রতিনিধিদের এই সফর আগামী নির্বাচন উপলক্ষে দেশের রাজনৈতিক মহলে নানা বার্তা দিচ্ছে।

এছাড়া দেশে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার দৃশ্যমান প্রভাব রয়েছে। ডলারের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে জ্বালানির দাম, ফলে বাস ভাড়ায় নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। এই নৈরাজ্যের বিরোধিতা করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

অন্যদিকে কোন্দল ও গ্রুপিংয়ে বিভক্ত তৃণমূল আওয়ামী লীগ। তৃণমূল থেকে দলকে সুসংগঠিত করা আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। তাদের দাবি, সামনে দুটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলকে তৃণমূল থেকে সুসংগঠিত করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া এবং বিশ্বের টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখা। . তাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগ তাদের কাজ করে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যকে বলেন, এটা একটা চ্যালেঞ্জ। সব সময় ইতিবাচক বা শুভ রাজনীতির বিরুদ্ধে অপশক্তি বা অশুভশক্তি বরাবরই সক্রিয় থাকে। বরাবরই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। খন বৈশ্বিক পরিস্থিতির কিছুটা বেখাপ্পা অবস্থা। অশুভ শক্তি তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। আজকের এই বাস্তবতা ও কারণ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে দলকে শক্তিশালী ও সংগঠনকে চাঙ্গা করে আগামী নির্বাচন মোকাবেলার জন্য আমাদের এই প্রস্তুতি রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এ প্রস্তুতি আরও বাড়াব এবং এগিয়ে যাব।

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে এই মুহূর্তে ভাবার কিছু নেই। নির্বাচনের এখনো প্রায় দেড় বছর বাকি। তৃণমূল পর্যায় থেকে সংগঠনকে শক্তিশালী করাই এখন আমাদের প্রধান কাজ। এটি চলছে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া দলটি ক্ষমতায় থাকায় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন অভিমুখে রাখা যায়- সেজন্য সরকারের পাশে থেকে সহায়তা করা। জনগণ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে, স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এভাবে চলতে থাকলে আগামী নির্বাচনে আমাদের দল আবারো জনগণের সমর্থনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে। আমরাও তাই আশা করি।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যকে বলেন, “নিঃসন্দেহে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশ পরিচালনা করে আসছে। দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণ করেছেন।কিন্তু সম্প্রতি অস্থির বিশ্ব অর্থনীতি আমাদের দেশেও আঘাত হানে।পরিকল্পিতভাবে জনমনে প্রতিনিয়ত ভীতি সৃষ্টি হচ্ছে, জনগণের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশবিরোধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীরা বৈদেশিক মুদ্রা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মজুত করে চলমান বৈশ্বিক সংকট অধিকতর ঘনীভূত করছে।’

বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য জামায়াত-বিএনপির নিয়ন্ত্রণে। এ সুযোগে তারা ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশপ্রেমিক শক্তির বিজয়ের মাধ্যমে বর্তমান সংকট মোকাবেলা এবং দেশকে সঠিক পথে আনতে কর্মপন্থা ও কৌশল নির্ধারণের কাজ চলছে।

তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আগামী নির্বাচন পার করতে সব প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। তাদের এবারের টার্গেট আবার ক্ষমতায় ওঠা মেগা প্রকল্পগুলো শেষ করা।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগকে টিকে থাকতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জে মোকাবেলার প্রশ্ন উঠছে যা তাদের মাঠে টিকার বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছে শীর্ষ নেতারা। তবে এ চেলেঞ্জকে মোকাবেলার প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছে তারা।

About Babu

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *