ময়মনসিংহের তারাকান্দায় নিখোঁজের ১৩ দিন পর নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার মহিষবেদ এলাকার সিধলং বিল থেকে বস্তায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত বাবুল মিয়া (৪৫) তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের মৃত হাসেন আলীর ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নেত্রকোনার পূর্বধলার মহিষবেদ গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান মিয়া (৪৫) ও তার স্ত্রী সখিনা বেগম (৪০)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ আগস্ট থেকে বাবুল নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজের পর পরিবারের সদস্যরা আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় এবং আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেশ কয়েকদিন খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। কোথাও খুঁজে না পেয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর তারাকান্দা থানায় ডায়েরি করেন বাবুলের ছেলে সোহেল।
এদিকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে গাজীপুরের তুরাগ এলাকা থেকে শাহজাহান ও তার স্ত্রী সখিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শাহজাহান ও সখিনাকে তারাকান্দা থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বাবুলকে হত্যার পর লাশ গুম করার কথা স্বীকার করে। এ সময় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বিল থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে ওসি আবুল খায়ের বলেন, বাবুল গ্রেফতারকৃত সখিনার ফুফাতো ভাই। সখিনার সঙ্গে বাবুলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সখিনার স্বামী শাহজাহান সম্পর্কের কথা জানতে পেরে বাবুল ও সখিনাকে সতর্ক করে। পরে বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি বাবুল। তারপরও বাবুল সখিনাকে বিরক্ত করতো। এ অবস্থায় বাবুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে সখিনা ও তার স্বামী। পরে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৪ আগস্ট সখিনা বাবুলকে মোবাইলে ডেকে সিধলং বিলে নিয়ে যায়। বাবুল সেখানে গেলে স্বামী-স্ত্রী মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে লাশ গুম করার জন্য একটি পাটের বস্তায় ভরে বিলের মাঝখানে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে। এ ঘটনায় নিহত বাবুলের ছেলে সোহেল মিয়া বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হবে।