বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হওয়ায় এবং ভোট জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসার কারণে গাইবান্ধার-৫ আসনে উপনির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এ সিদ্ধান্তের বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গাইবান্ধা উপনির্বাচনে কোন ধরনের ভোট জালিয়াতির ঘটনা কিংবা কোনো নৈরাজ্য হয়নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নানা অনিয়মের কারণে ৫১টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। পরে আমরা পুরো আসনে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। সেখানে আর কোনো ভোট হচ্ছে না। ভোটের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে। বন্ধ নির্বাচন সংক্রান্ত আইন পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসির নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হানিফ। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনে কোনো নৈরাজ্য হয়নি। ঢাকায় কমিশন ভবনে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এত কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ইসি কীভাবে নিল তা বোধগম্য নয়।
সিইসি বলেন, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় আমরা গাইবান্ধা-৫ আসনের পুরো নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণ বন্ধ রেখেছি। সেই সিদ্ধান্ত রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হয়েছে।
এ আসনের ১৪৫টি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ইভিএমে ভোট হয়েছে। ঢাকার নির্বাচন ভবনে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি কেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। গোপন কক্ষে বেশ কয়েকজনের অবৈধ প্রবেশ, একজনকে অন্যজনের ভোট দেওয়াসহ নানা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার পর দুপুর ১টা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরে গোটা নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা আসে।
সিইসি বলেন, আমরা মনে করি ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কোনো দল বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ফলে আমাদের মতে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে না।
এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির এএইচএম গোলাম শহীদ (লাঙ্গল), জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান (আপেল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক) ভোটে অংশ নেন।
গাইবান্ধার ৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি এবং অনিমের ঘটনা ঘটার কারণে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাদে অন্য সকল দলের প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বিকাল ৪ টার পরে গাইবান্ধা জেলার বগারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাতীয় পার্টি এবং আরও তিনজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। বর্তমানে ওই আসনে সম্পূর্ণরূপে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।