হিরো আলমের বাড়ি হলো বাংলাদেশের বগুড়া জেলাতে। আলোচিত হওয়ার পূর্বে জানা যায় তিনি ছোটো খাটো ব্যবসা করতেন। হিরো আলম বিভিন্ন শিল্পীর গান অনুকরণ করে সেইটা আবার গেয়ে থাকেন। এছাড়াও তিনি করেন নানারকম ব্যতিক্রমধর্মী অভিনয়, যেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে হয়ে যায় আলোচিত ও সমালোচিত। সম্প্রতি এক চিকিৎসক বলেছেন হিরো আলমের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন আপনারা।
বাঙালি কিছু অর্জনে যতটা আনন্দ পায় তার চেয়ে বেশি আনন্দ পায় অন্যের ব্যর্থতা দেখে। কারো অক্ষমতা উদযাপনের জন্য তার কোনো অংশীদার নেই। যে গানগুলো কেউ পরিবেশন করেনি, সেগুলো নিয়ে মজা করে সে চরম আনন্দ পায়। পাড়ার পাগলকে ছুরিকাঘাত করে দুই অপবাদ শুনে খুশি হলেন। পাগলের চিকিৎসা নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। হিরো আলমের এত ভিউ। তার কর্মকাণ্ড বাঙালি দেখে। মুগ্ধ হয়ে তার গান কেউ শোনে না। তাতেই হিরো আলমের আনন্দ। ‘দেখুন’ এটি। ভিউ হলে টাকা। আপনি অন্যের কথায় তাকে শুনতে গেলেন, আসলে আপনি দেখতে গেলেন মজাটাও একটা দৃশ্য। কেউ তাকে অপমান করেছে। কৌতূহল ভরা, আপনি তাকে খুঁজছেন এবং তাকে দেখেছেন। বাস, এটা একটা দৃশ্য।
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এটাই নতুন বাস্তবতা। রবীন্দ্রসংগীতে হাত দিয়েছেন হিরো আলম। এটা হওয়ার কথা ছিল। কারণ তিনি (বা তার প্রযোজক) জানেন একটি প্রতিক্রিয়া হবে। তার মতামত দরকার। আমাদের সাংস্কৃতিক নেতারা ক্ষিপ্ত। আসলে হিরো আলমের ফাঁদে পা দিয়েছে তারা। তাদের উন্মাদনায় হিরো আলমকে নিয়ে ব্যাপক চর্চিত হচ্ছে। অনুশীলন থাকবে, দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।
মাসের পর মাস টাকা। কেউ কেউ বলছেন, হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলা করে লাভ নেই। তাতে তিনি আরও আলোচিত হবেন। আদালতের সাংবাদিকরা টিভিতে লাইভ আপডেট দেবেন। আলোচনায় থাকতে সব কিছু করবেন হিরো আলম। সেতো এমপিও নির্বাচন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এমন কোনো ধারা বা উপধারা নেই যে অসংগতিপূর্ণ গান গাইলে শাস্তি হবে। যে কেউ যে কোনো গান গাইতে পারে, যে কোনো উপায়ে। ফলে মামলা করে তাকে সাজা দেওয়া যাবে এমনটা না ভাবাই ভালো। সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো সেন্সরশিপ নেই। মান নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে সে যা পারে তাই করতে পারে। যদি শুধু ভিউ। দর্শন থাকলে দুর্গ জয় হয়। মিয়া কমেন্ট করলেও ‘হোয়াট এ সিলি গান’, কিন্তু মাইলেজ বাড়ে।
উল্লেখ্য, হিরো আলমের কর্মকান্ডে একদিকে মানুষ যেমন বিরক্তবোধ হয় তেমনি আনন্দও পায়। সে মূলত দর্শকদের আনন্দ দিতেই মূলত করে থাকে ব্যতিক্রমধর্মী কার্যক্রম। তার মতো দ্বিতীয়টি বাংলাদেশে আর খুঁজে পাওয়া খুবই মুসকিল। তিনি তার প্রতিভার দ্বারা জয় করেছেন অনেক মানুষের হৃদয়।