ড. হাসান মাহমুদ হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন সক্রিয় ও প্রবীন নেতা। তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী একজন কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তি। দায়িত্বকে আসীম প্রাধন্য দিয়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন সর্বদা। সম্প্রতি জানা গেছে তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ঘুম নেই প্রধানমন্ত্রীর আর বিএনপি করছেন ফটোসেশন।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুঃসময়ে বিএনপি জনগণের পাশে থাকে না। তারা শুধু গসিপ করছে। সোমবার (২০ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকরা বন্যা নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসান মাহমুদ বলেন, রাজনীতি মানুষের কল্যাণ, দেশ ও সমাজের সেবা। কিন্তু বন্যার সময়ও বিএনপির নেতারা ঢাকার নয়া পল্টন, প্রেসক্লাব ও দলীয় কার্যালয়ে বসে শুধু বিবৃতি দিয়েছেন, বক্তব্য দিয়েছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে নেই। এখন হয়তো তারা আমাদের বক্তব্যের পর কিছু ফটো সেশন করবে। কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়াবেন না। অন্যদিকে বন্যা শুরু হতেই বঙ্গবন্ধু কন্যার নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আমাদের নেতাকর্মীরা। মানুষের জন্য জীবন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, করোনার সময়ও বিএনপি নেতারা জনগণের পাশে দাঁড়াননি। এরপরও আমাদের দলের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা ত্রাণ কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর ফলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৭১ সদস্যের মধ্যে পাঁচজনসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদের অনেক সদস্য ও সংসদ সদস্যও মারা যান। কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুঃসময়ে জনগণের পাশে দাঁড়ায় না। তারা শুধু করোনায় ফটো সেশন করেছে।
যেকোনো দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আট থেকে ১০ দিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন, এবার দেশে বন্যা হতে পারে। তিনি আবহাওয়াবিদ নন, তবে তিনি সাধারণ জ্ঞানের বাইরে বলেছিলেন।
তিনি বলেন, দেখা গেছে একদিনে এক হাজার মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই প্রশাসনের সব সদস্যকে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করেছিলেন। তিনি আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন।
ডাঃ হাসান বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীরা নিজেরাই প্লাবিত। বন্যায় তাদের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। তারপরও প্রশাসনের পাশাপাশি তারা বন্যা দুর্গতদের পাশে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আপনারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা দেখেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টেলিভিশন চ্যানেলেও এমন খবর এসেছে। পানি ঠেলে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যু হল এক ছাত্রলীগ নেতার।
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপির নানা মন্তব্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান বলেন, পদ্মা সেতু তাদের জন্য কষ্টের। এটা বিএনপি-জামায়াত এবং যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল তাদের জন্য কষ্টের বিষয়। কারণ, তারা এই পদ্মা সেতু চায়নি। তাই এই পদ্মা সেতু হওয়াটা বিরক্তিকর, উদ্বোধন হলে আরও বড় জ্বালা।
তিনি বলেন, বিরোধীরা চায় না পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। তারা উদ্বোধন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল। অনেক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা হয়েছে। সেই জ্বালা থেকে তারা এসব কথা বলে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সরকার কোনো উৎসব করছে না। জনসভা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ফলে শুধু দুই পাশের মানুষের যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে না। এটি বন্যা মোকাবেলায়ও সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের মানুষ আজ খুশি। সারা দেশের মানুষ একে শুধু সেতু হিসেবে নেয়নি। এই সেতু আমাদের জাতির যোগ্যতা, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। জননেত্রী শেখ হাসিনার সক্ষমতার প্রতীক, তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সক্ষমতার প্রতীক। ২৫ জুন একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।
প্রসঙ্গত, প্রত্যেক বছর বন্যায় আসীম ক্ষতির মুখে পরে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেই ক্ষতি খুব দ্রুত লাঘব হয়ে যায় কারণ সরকার বানভাসীদের উদ্ধারের জন্য খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। দেশের মানুষদের পাশে থেকে তাদের সব রকম সহযোগিতা করাই সরকারের লক্ষ।