তুমুল আলোচিত সেই কলেজ শিক্ষিকার প্রয়ান নিয়ে নেট দুনিয়ায় বেশ ঝড় উঠেছে। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে শিক্ষিকার এমন অনাকাঙ্খিত প্রয়ান সত্যিও অনেক দুঃখের একটি বিষয়। প্রেম-ভালোবাসা মানেনা কোনো জাত, ধর্ম আর বয়স। কিন্তু সেই প্রেম-ভালোবাসার বিয়ে যে শিক্ষিকার প্রয়ান ডেকে আনবে সেটা কেউ কখনো ভাবতেই পারেনি। সম্প্রতি জানা গেছে এর আগে মামুনের বেপরোয়া বাইকের চাপায় প্রাণ যায় একজনের।
নাটোরে কলেজ ছাত্রীকে (২২) বিয়ে করা জনপ্রিয় কলেজ শিক্ষক খায়রুন নাহারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কলেজ শিক্ষক-ছাত্র দম্পতির বিয়ের 14 দিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল, বাড়ি থেকে শিক্ষিকার মৃতদেহ উদ্ধার। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ বলে আত্মহত্যা আবার কেউ বলে হত্যা। তবে ঘটনার পর শিক্ষকের স্বামী মামুন অসংলগ্ন কথা বলেন। এমনকি ওই ঘটনার জন্য মামুনের দিকে আঙুল তোলেন নিহতের স্বজনরা। মামুন মাদকাসক্ত বলেও দাবি করেন তারা।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামুন ছোটবেলা থেকেই বখাটে। মাদকের সাথে জড়িত। তার পরিবার নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। মামুনের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবাড়িশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পাটপাড়া গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, মামুনের মায়ের প্রথম বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী সোনাবাজু গ্রামের শুকচানের সঙ্গে। ওই পরিবারে রাজু ও রায়হান নামে দুই ছেলে রয়েছে। মামুনের বাবা মোহাম্মদ আলী তখন ওই এলাকার ইউপি সদস্য ছিলেন। তখন মামুনের মাকে মামুনের বাবা মামি বলে ডাকতেন। কিন্তু একপর্যায়ে মামুনের মা রাজু-রায়হানকে ছেড়ে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে সংসার শুরু করেন। এ পরিবারে মামুন ছাড়াও তার বড় দুই বোন রয়েছে। দুই বোনেরও বিয়ে হয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী আরো জানায়, মামুন ছোটবেলা থেকেই বেপরোয়া। ২ বছর আগে সিধুলি গ্রামের গজেন ঘোষ তার বেপরোয়া মোটরসাইকেলের চাপায় মারা যান। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিটে গেলেও মোটরসাইকেলটি এখনো থানায় রয়েছে।
এর আগে বিয়ের আট মাস পর রোববার সকালে নগরীর বল্লারীপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষক খায়রুন নাহারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় স্বামী মামুনকে আটক করেছে পুলিশ।
ভবনের বাসিন্দা ও বাসিন্দারা জানান, রোববার সকালে স্বামী মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান, তার স্ত্রী খায়রুন নাহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সন্দেহ করা হচ্ছে লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে খায়রুন নাহারের লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। তারা মামুনকে ঘরের মধ্যে তালা দিয়ে পুলিশে খবর দেয়।
প্রসঙ্গত, প্রেম-ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে মানুষ কে ভালো আর কে মন্দ তার পার্থক্যটা ভুলে যায়। জীবনে মানুষ চিনতে ভুল করলে তার খেসারত কতটা যে খারাপভাবে দিতে হয় মানুষকে সেটা এই শিক্ষিকার করুণ পরিণতি দেখলে বোঝা যায়।