প্রেমের টানে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছুটে এসেছেন নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে সরাসরি দেখার আশায়। প্রেমিকার সাথে এসে দেখা হলেও প্রেম নিয়ে তাকে ভোগান্তীর শিকার হতে হয়েছে। এমনকি এই প্রেমের কারনে তাকে নানাভাবে লাঞ্চিত হতে হয়েছে প্রেমিকার মাধ্যমে। তিনি আইনি জটিলতায়ও পড়েছেন এই প্রেমকে কেন্দ্র করে।
বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে বরগুনার তালতলীতে আসা ভারতের তামিলনাড়ু থেকে প্রেমকান্ত নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে তালতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মেয়েটির বাবা। শুক্রবার রাতে তিনি আবেদন করেন। এদিকে প্রেমকান্তও সন্ধ্যার পর তালতলী ত্যাগ করেন বলে জানা গেছে। তিনি এখন কোথায় আছেন কেউ বলতে পারছেন না। তালতলী থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে তালতলীতে আসেন প্রেমকান্ত। সেখানে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি সরকারি বাংলোতে অবস্থান করেন। প্রেমকান্ত দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তালতলী উপজেলার টিএন্ডটি রোডের বাসিন্দা ও বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্রী একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। টানা তিন বছর ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। একপর্যায়ে শুধু মেয়েটির সঙ্গে নয়, দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি তামিলনাড়ু থেকে প্রথমে বাংলাদেশের বরিশাল শহরে আসেন এবং তারপরে তালতলীতে আসেন যাতে তার ভালোবাসার মানুষটিকে সরাসরি দেখতে।
প্রেমকান্ত জানান, বরিশালে আসার পর ওই শহরেই তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা হয়। নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা প্রেমকান্ত আরও জানান, করো// নার কারণে তিনি এত দিন বাংলাদেশে আসতে পারেননি। করো// না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ২৪ জুলাই বাংলাদেশে আসেন প্রেমকান্ত। বরিশালের একটি রেস্তোরাঁয় বান্ধবীর সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। সাক্ষাতের একদিন পর প্রেমকান্ত জানতে পারে তার প্রেমিকা তার অজান্তেই অন্য কারো সাথে প্রেম করছে। আর তখনই হঠাৎ করেই প্রেমিকা ও তার পরিবারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি প্রেমিকের আরেক প্রেমিকের হাতে মারধরও করেছেন তিনি। পরে তাকে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট পুলিশের হেফাজতে থাকতে হয়। আর এত কিছুর পরেও প্রেমকান্ত বিশ্বাস করতেন, দেখা হলে হয়তো তার প্রেমিকা আবার তার জীবনে ফিরে আসবে। তাই শুক্রবার সকালে বরিশাল থেকে সড়ক পথে তালতলী আসেন প্রেমকান্ত। বিকেলে তালতলীর একটি বাংলোতে প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর তাকে না পেয়ে সন্ধ্যায় তালতলী ত্যাগ করেন তিনি। এরপর তার হদিস জানা যায়নি।
এদিকে, কিশোরীর বাবা কৃষ্ণ মেনন মন্ডল তালতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, প্রেমকান্ত নামে তামিলনাড়ুর এক যুবক প্রেমের দাবি করে আমাদের পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। আমি এটা ঠিক করতে চাই। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ জুলাই বরিশালের একটি রেস্তোরাঁয় তিন বান্ধবীর সঙ্গে ছেলেটির সঙ্গে দেখা হয় মেয়েটির। এরপর গত ২৭ জুলাই মেয়েটি বরিশালের কাশিমপুর এলাকায় ছেলেটিকে দেখা করতে ডাকলে সে কুপ্রস্তাব দেয় এবং ছেলেটিকে নিয়ে ঢাকায় যেতে বলে। ছেলের সাথে আমার মেয়ের ঝগড়া হয়। স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি প্রত্যাখ্যান করে প্রেমকান্তকে বরিশাল বিমানবন্দরে থানায় সোপর্দ করে। তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখওয়াত হোসেন তপু জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় মেয়েটির বাবা কৃষ্ণ মেনন মন্ডল বাদী হয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে, ভারতের তামিলনাড়ু থেকে প্রেমকান্ত নামে এক যুবক তালতলীতে আসার পর তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পুলিশ সদস্যকে বাংলোতে পাঠানো হয়েছিল, তিনি বলেছিলেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের জেরে প্রেমিকাকে একবার সরাসরি দেখার আশা নিয়ে এক প্রবাসী যুবক এক দেশ থেকে আরেক দেশে এসে অপমানিত হয়েছেন প্রেমিকার কাছে। ভুক্তভোগী প্রবাসী প্রেমিক প্রেমিকার কাছে এসে জানতে পারে যে, তার প্রেমিকের আরো একটি প্রেমিক রয়েছে। এমনকি সেই প্রেমিকের হাতে প্রেমিকা নিজেই প্রবাসী প্রেমিককে মার খাইয়েছে।