সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে গত বছর তিনেক আগেই বাংলাদেশি এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ভারতীয় এক তরুনের। আর এরই ধারাবাহিকতার মধ্যে দিয়ে সম্প্রতি গত কয়েকদিন আগেই প্রেমিকাকে দেখতে বাংলাদেশে ছুটে আসেন ভারতীয় ওই তরুণ। কিন্তু দুৰ্ভাগ্যবসত বাংলাদেশে এসে আর নিজ দেশে ফেরা হলো না তার।
মৃত জাবেদ খান (২৯) ভারতের উত্তর প্রদেশের হাসানপুরের বাসিন্দা।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হলেও বুধবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
আজ ভোর ৪টার দিকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
মর্গে অবস্থানকালে জাভেদের প্রেমিক জানান, গত ১০ অক্টোবর হঠাৎ বুকে ব্যথা শুরু হলে জাভেদকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ওই তরুণী জানান, অসুস্থ হওয়ার পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাভেদের পরিবারকে বিস্তারিত জানানো হয়েছিল।
তিনি জানান, তিন বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। জাবেদ এর আগেও বরিশালে এসেছিল এবং সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর আমার সঙ্গে দেখা করতে বরিশালে এসেছিল। তিনি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় নাগরিক জাবেদ ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে গত ৯ অক্টোবর লঞ্চে করে বরিশালে এসে নগরীর একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। পরে জাভেদও তার প্রেমিকার সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়। একপর্যায়ে তার বুকে ব্যথা হচ্ছিল। তিনি সদর হাসপাতালে গিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হোটেলে যান। পরের দিন আবার ব্যাথা হলে তিনি অ্যাপোলোতে একজন ডাক্তারের কাছে গেলেন, সেখানে ডাক্তার তার রিপোর্ট দেখে তাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। বেলা ২টার দিকে জাবেদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার করতে বলা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর সুরতহাল রিপোর্টে হাতে পায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, জাবেদের অনেক সমস্যা রয়েছে। কিডনির সমস্যার পাশাপাশি তার লিভারেও অনেক সমস্যা ছিল। ভারতেও চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে কিছু জিনিস অর্থাৎ অ্যালকোহল খেতে নিষেধ করেন। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে এটি জানতে পেরেছি।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই তরুণের দেহ এই মুহূর্তে হিমঘরে রাখা হচ্ছে। তার পরিবারের স্বজনরা আসার কথা রয়েছে। তারা আসলে তাদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।