একটি দেশের গোপন তথ্য অন্য দেশে গেলে সেটি ওই দেশের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। আর সেই তথ্য যদি পাশ হয় সেনাবাহিনীর মুখ থেকে তাহলে সেটা সত্যি দুঃখ জনক। কারণ একজন সেনাবাহিনীকে নিজ দেশের তথ্য গোপন রাখার জন্য বিভিন্ন রকমের কঠোর ট্রেনিং দেওয়া হয়। তবে কোন প্রকার জোর করা ছাড়াই নিজ দেশের তথ্য অন্য দেশে শুধুমাত্র প্রেমের জরে ফাঁস করে দেওয়া এটি আসলে নিন্দনীয়।
শত্রু প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের কাছে তার দেশের সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে এক ভারতীয় সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজস্থানে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত সৈনিক তার রেজিমেন্টের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওই দুই নারীকে দিয়েছিল। ধৃত জওয়ান পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। নাম শান্তিময় রানা, বয়স 24। রাজস্থান পুলিশের মহাপরিচালক (গোয়েন্দা) উমেশ মিশ্র বলেন, শান্তিময় হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানি নারী এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
জানা গেছে, শান্তিময়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠা দুই নারী সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে দাবি করেন। তাদের একজন গুরনূর কৌর ওরফে অঙ্কিতা। তিনি উত্তরপ্রদেশের সাহজাহানপুরের বাসিন্দা বলে দাবি করেন। সে নিজেকে আর্মি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছে। দ্বিতীয় মহিলা শান্তিময়ের কাছে নিজেকে নিশা বলে পরিচয় দেন। আর্মি নার্সিং সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হয়েছে।
রাজস্থান পুলিশের ডিজি উমেশ মিশ্র বলেছেন, এই দুই নারী আসলে পাকিস্তানি এজেন্ট।
শান্তিময়, যিনি ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন, পুলিশকে বলেছিলেন যে তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই দুই মহিলার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপ অডিও ও ভিডিও কলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা বলতেন শান্তিমায়ার।
পুলিশ জানায়, শান্তিময় তথ্য দেওয়ার বদলে মোটা অঙ্কের টাকা পেতেন। এমতাবস্থায় আটক সেনারা যুদ্ধ মহড়ার গুরুত্বপূর্ণ ছবি ও গোপন তথ্য ও ভিডিও ফাঁস করত।
ঘটনার বিষয়ে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ফোনটির প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তখন ধৃত সেনা জওয়ানের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয়।
তবে মামলার তদন্ত এখনো চলমান। আসলে ঘটনার সত্যতা কি ছিল সেটা এখনও পুরোপুরি ভাবে প্রকাশ পায়নি। অভিযুক্ত ওই সেনার ফোন জব্দ করার পরে যাচাই-বাছাই চলছে। পুলিশের ধারণা মোবাইল ফোন থেকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা যেতে পারে।