প্রেমের জরে মানুষ নানা রকমের কাণ্ড ঘটিয়ে থাকে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে প্রেমের জরে প্রেমিকের বাড়ি অবস্থান নেওয়া তরুণীদের বিভিন্ন ঘটনা গণমাধ্যমের সামনে এসেছে এসকল ঘটনায় প্রায় সময় লক্ষ্য করা যায় দীর্ঘদিন প্রেমের পরে হঠাৎ নিজের প্রেমিকাকে অস্বীকার করে যুবক এমতাবস্থায় ওই নারীরা নিরুপায় হয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয় তবে এবারের ঘটনা একদমই ভিন্ন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রংপুরের বদরগঞ্জের লোহানী পাড়া ইউনিয়নের মাধাই খাম জলেপাড়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে থাকা নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। চারদিন অবস্থানের পর শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টায় বদরগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার ওই ছাত্রীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও ছেলে পক্ষ ও মেয়ে পক্ষের লোকজনকে থানায় ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ওই ছাত্রী বলেন, সাগর বিশ্বাসের সঙ্গে আমার সাড়ে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক। এতে আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতো সামাজিকতা করেছি। কিন্তু সাগর এখন আমাকে ছেড়ে ২৬ জুলাই সকালে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানার বেলেঘাটা ইউনিয়নে এক মেয়েকে বিয়ে করতে চলে যায়।এ কথা শুনে আমি তাদের বাসায় থাকি। মেয়েটি জানায়, শুক্রবার বিকেলে পুলিশ এসে থানায় আমার বক্তব্য নেয়। পুলিশের সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক না হলে আবারও সাগর বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেব।
স্থানীয় সাবেক জনপ্রতিনিধি আইয়ুব আলী ঝন্টু জানান, গত ২৬ জুলাই মেয়েটি বিয়ের দাবিতে সাগর বিশ্বাস নামে এক যুবকের বাড়িতে থাকে। কিন্তু এই ঘটনার তিন দিন আগে সাগরের সাথে আরেক মেয়ের আশীর্বাদ হয়। যৌতুকের জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং সাগর বিশ্বাসের বাবার কাছে স্বর্ণালঙ্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে নবম শ্রেণির ছাত্রী বিয়ের দাবিতে সাগরের বাড়িতে থাকে।
এ খবর জানতে পেরে নববিবাহিত তরুণীর পরিবার সাগর বিশ্বাসকে আটক করে। পরে ২৮ জুলাই স্থানীয় এক বৈঠকে মেয়েটিকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার শর্তে সেখান থেকে ছেলেটিকে আনার সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু সময়মতো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তারা সাগর ছাড়েননি। দেরি করায় তারা বরং দশ লাখ টাকা দাবি করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় এখন উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় মেয়ে ও ছেলে উভয়েই থানায় অভিযোগ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অবস্থান নিয়ে বসে থাকা শিক্ষার্থীসহ উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে পাঠায়।
পজিশনে বসা শিক্ষার্থীরা বলেন, ছেলেটি যে টাকা নিয়েছে তা তারা দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে সেই টাকা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। আমার ভাই অনেক কষ্টে সেই টাকা জোগাড় করলেন। কিন্তু বিলম্বের কারণে তারা টাকা নেয়নি। এরপর আমরা থানায় জিডি করতে গেলে ছেলের পরিবার আমাদের মারধর করে এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় আমরা অসহায়। আমার ভাই শুক্রবার থানায় অভিযোগ করতে বাধ্য হন। আমাদের দাবি সাগর বিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের ভাগ্নির বিয়ে দেওয়া হোক। তা না হলে এই মেয়েকে সমাজে কোথায় নিয়ে যাব?
এ ঘটনায় ওই তরুণীকে পুলিশের আটকের ঘটনায় এলাকাবাসির অনেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেছেন এ ঘটনায় সম্পূর্ণ অপরাধ সাগর নামের ওই যুবকের। সে তার বিয়ের আগে এই মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। এছাড়া বিয়ের পরে তার স্ত্রীরর পরিবারেরর কাছেই যৌতুক দাবি করে বসে।