দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগে অবশেষে ৮ জুলাই সকাল ১১টার দিকে পরলোক গমন করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম খ্যাতিমান চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বাবা আবদুর রব। হঠাৎ করেই বাবাকে হারিয়ে যেন মানসিকভাবে ভেঙে পরেছেন গুণী এই পরিচালক।
এদিকে ফারুকী তার বাবার মৃত্যুতে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো:
‘ইলহামের একটু ঠান্ডা লেগেছে তাই আমরা তাকে বাড়ি থেকে বের না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিশা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বাবাকে দেখাতে চারদিন আগে তাকে নিয়ে নাখালপাড়ায় যায়। বাবার শরীর অনেকদিন ধরেই খারাপ। ঠিকমতো কথা বলতে পারতো না। তিশার কোলে হাত রেখে আব্বা ইশারা করলেন যেন ইলহামের হাতটা আব্বার হাতের উপর রাখলেন। তিশার হাত ধরে বাবা অনেকক্ষণ পরম মমতায় তার দিকে তাকিয়ে রইলেন। বাবা হয়তো জানতেন নাতনির সাথে এটাই তার শেষ দেখা।
বাবা আজ সকালে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা সবাই জানতাম আব্বার শরীর খুব খারাপ। কিন্তু তারপরও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে থাকলাম বাবা যেন আরও কয়েক বছর আমাদের সঙ্গে থাকেন। যেনো ইলহাম আরেকটু বড় হয় দাদার সাথে, যাতে ওর স্মৃতিতে দাদা থাকে।
ইলহামের হয়তো দাদার স্মৃতি বলে আর কিছু থাকলো না। ও হয়তো মনেও করতে পারবেনা দাদার মুখটা। ও হয়তো জানবেও না প্রাচীন বংশের এই বড় সন্তান কি করে নিজের ভাগ্য গড়েছে, কি করে কোন এক গ্রামের দুর্গম রাস্তা ছাড়িয়ে এই শহরের বুকে এসে দাঁড়িয়েছে!
আব্বা নাখালপাড়ায় নিজের বাড়িটা খুব পছন্দ করতেন। তিনি এই বাড়ি ছেড়ে কোথাও থাকতে চাননি। আমি তাকে আমার বনানীর বাড়িতে এক রাত থাকতেও বাধ্য করতে পারিনি। বাবা আজ চিরতরে এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। বাড়ির সামনের রাস্তায় জল ছিল কি না, ছাদের ঘর তালা দেওয়া হয়েছিল কি না, মসজিদের নতুন তলার কাজ শেষ হয়েছে কি না- সকল উৎকন্ঠার শেষ আজকে।। এইতো জীবন। আম্মা গিয়েছিলেন উনার প্রিয় শুক্রবারে। আব্বাও গেলেন শুক্রবারে, হজ্জ্বের দিনে! আসলেই কি গেলেন?’
রাজধানীর ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আবদুর রব। তার মৃত্যুতে গভির শোক প্রকাশ করে পরিবার-পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন শোবিজ অঙ্গনের নানান তারকারা।