সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফিনিক্স থেকে হনলুলুর উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের কিছুক্ষনের মধ্যেই রীতিমতো বড় এক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হাওয়াইয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান। দেশটির এক সংবাদ মাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, উড্ডয়নের পর হঠাৎই অস্যভাবিকভাবে শুরু হয় একের পর এক তীব্র ঝাকুনি। এর ফলে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এবং তাদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর বলে জানা যায়।
হাওয়াইয়ান এয়ারলাইনসের এইচএ৩৫ ফ্লাইটটি হনলুলুর ড্যানিয়েল কে ইনোয়ে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কিছুক্ষণ আগে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঝাঁকুনির সময় ওই এলাকায় বজ্রপাতের খবর পাওয়া গেছে।
এয়ারবাস এ৩৩০-২০০-এ মোট ২৭৮ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাতের ফলে জ্ঞান হারানো ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতসহ ২০ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহতদের মধ্যে ১৭ জন যাত্রী ও তিনজন ক্রু সদস্য রয়েছেন যাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আবার একটি ১৪ মাস বয়সী শিশু এবং একটি কিশোর ছিল।
জরুরী স্বাস্থ্য পরিষেবার হনলুলু বিভাগের একটি বিবৃতি অনুসারে, সেদিন সকাল ১১ টার পরে একটি ফোন কল এসেছিল। হাওয়াইয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটি প্রায় ৩০ সেকেন্ডের জন্য হিংস্রভাবে কেঁপে ওঠে বলে জানা গেছে। ফলস্বরূপ, কমপক্ষে ৩৬ জন আহত হয়েছে। তাদের অনেকের রক্তক্ষরণও হয়েছে।
এদিকে, ফ্লাইট অবতরণের পর বিমানের ভেতরের যে ছবিগুলো দেখা গেছে তা ভয়ঙ্কর। ভিতরের প্যানেল ভেঙে গেছে। লাইট ভেঙে গেছে। চারিদিকে অক্সিজেন মাস্ক ঝুলছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের মতে, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণ হল বিমানটি বৈরী আবহাওয়ার সম্মুখীন হয়েছিল। সে কারণেই হয়তো তীব্র ঝাঁকুনি শুরু হয়।
ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন কয়েকজন যাত্রী। কায়লি রেইস নামে এক যাত্রী বলেন, মায়ের সঙ্গে বিমানে ছিলাম। বাথরুম থেকে বের হয়ে সিট বেল্ট বাঁধার চেষ্টা করতেই প্রচন্ড জোরে নিচে পড়ে গেলাম। কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিমানে একটি হিংস্র কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
আরেক যাত্রী বলেন, ধাক্কাটা এতটাই তীব্র ছিল যে তাদের সিটবেল্ট বেঁধে রাখা হলেও তারা বিমানের সিট থেকে ছিটকে পড়েছিল।
হাওয়াইয়ান এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে বলেছে, অল্প কিছু লোককে বিমানবন্দরে সামান্য আঘাতের জন্য চিকিত্সা করা হয়েছে এবং অন্যদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মাঝে মধ্যেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ ধরণের ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় বিমান যাত্রীদের। তবে সৌভাগ্যবসত পাইলটের বুদ্ধিমত্তার কারণে বড় দুর্ঘটনার কবল থেকেও প্রাণে বেছে যেতে দেখা গেছে যাত্রীদের। আর এবারও সেই ঘটনার ব্যতিক্রম হয়নি।