দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে যেন আলোচনার শেষ নেই। একের পর এক নাম আসছে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে। এবার দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় যুক্ত হয়েছে নতুন একটি নাম। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে এই পদের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়ার পর এই নাম যুক্ত করা হয়। উত্তরাঞ্চলের লোকটি সাবেক মন্ত্রী ও সাতবারের সংসদ সদস্য।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমানের নাম রয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনকে রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গেল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের নাম যুক্ত হয়েছে। সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ফিজার দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দলের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে সভাপতি পদে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষমতা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য গতকাল সংবাদপত্রকে বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে রাজনীতিবিদদের মধ্যে আগ্রহ দেখা গেছে। এছাড়াও, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল, দেশ ও শেখ হাসিনার প্রতি অটুট আস্থা প্রকাশ করেছেন এমন একজন রাজনীতিবিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি সাহস ও দৃঢ়তার সাথে এটি মোকাবেলা করেছেন। তাই রাষ্ট্রপতি এমন একজন হওয়া উচিত যিনি জনপ্রিয় এবং সাহস ও চেতনা আছে। বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার সাথে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানান, সংসদীয় দলের বৈঠকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি হামিদের ভূমিকাকে উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদরা মনোনয়ন পাবেন বলে সিনিয়র নেতারা একমত। এরপর রাষ্ট্রপতির মনোনয়নে ফিজারের নাম উঠে আসে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন, সংসদীয় দলের বৈঠকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি হামিদের ভূমিকাকে উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদরা মনোনয়ন পাবেন বলে সিনিয়র নেতারা একমত। এরপর রাষ্ট্রপতির মনোনয়নে ফিজারের নাম উঠে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে দুটি নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জানা যাবে কাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী ওই দিনই সিইসি কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের মনোনীত প্রার্থীই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ইতিমধ্যেই প্রার্থী দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে।
সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হতে পারেন এমন প্রশ্নে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান ও শাজাহান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দলের প্রার্থী শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একক ক্ষমতা দিয়েছেন। তিনিই এটা চূড়ান্ত করবেন আমরা এ বিষয়ে জানি না।
১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই। ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রত্যাহার। ১৯ ফেব্রুয়ারি সংসদ ভবনে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে রাষ্ট্রপতি পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন একক প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের পর, একাধিক প্রার্থী নিয়ে শুধুমাত্র একটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়েছিল। সেটা ১৯৯১ সালে। ক্ষমতাসীন বিএনপি ছাড়াও তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগও রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করেছিল।
উল্লেখ্য, এ দিকে রাষ্ট্রপতি পদে কে আসছে তা নিয়ে সেভাবে এখনো নিশ্চিত কিছুই বলছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ। আর এই কারণে আলোচনার তালিকা যেন হচ্ছে বেশ দীর্ঘ। এখন শুধু আগামী কালের অপেক্ষা শেষ পর্যন্ত কে হাসছে শেষ হাসি এটাই এখন দেখার বিষয়।