স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক যদি করেন এমন অপ্রত্যাশহিত কাজ তাহলে তার অধঃস্তন কর্মচারীরা বা আগামী প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা কি শিখবে তার কাছ থেকে। তিনি উচ্চ শিক্ষিত ও সমাজে সম্মানিত একজন ব্যক্তি। তার দ্বারা এমন কোনো কাজ প্রত্যাশীত নয় যা শিক্ষিত সমাজকে করবে লজ্জিত। সম্প্রতি তেমনি ন্যাক্কারজনক কাজ করলেন দিনাজপুরের বিরামপুর ( Birampur Dinajpur ) উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি স্কুলের মাঠেই তৈরী করলেন নিজের বাড়ি।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে খেলার মাঠে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পরে ইউএনও বাড়ি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার দিওর ইউনিয়নের শৈলাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ঘর তৈরি হলে শিক্ষার্থীদের খেলার পরিবেশ নষ্ট হবে এবং শিশুদের স্কুলে যাওয়ার রাস্তা থাকবে না। তাই বাড়ির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে শিশুদের খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। প্রাচীরের পশ্চিম পাশে একটি নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝখানে শিশুদের জন্য একটি খেলার মাঠ আছে। মাঠের মাঝের অংশে সিসি ঢেলে বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেন প্রধান শিক্ষক মাহাবুবর রহমান। কিন্তু এখন কাজ বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার দিওর ইউনিয়নের শৈলহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক মাহবুবর রহমান ১৯৯৩ সালের নভেম্বর মাসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে দানের দলিলের মাধ্যমে ২৯ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করেন। পরের বছর, ১৯৯৪ সালে, প্রধান শিক্ষক একই এলাকার আরও ৩৩ শতাংশ জমি নিবন্ধন করেন।
এরপর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। সম্প্রতি, ৬২ শতাংশ জমির মধ্যে ৩৩ শতাংশ জমি স্কুলের এবং ২৯ শতাংশ প্রধান শিক্ষক নিজেই দখল করে সেই জায়গায় বাড়ি তৈরি করতে শুরু করেন।
আলমাস নামের ওই স্কুলের এক শিক্ষার্থী বলেন, বড় স্যার, যেখানে ঘর তৈরি হচ্ছে সেখানে আমাদের খেলার মাঠ থাকবে না। তাছাড়া বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হবে। এখানে বাড়ি নির্মাণ করলে আমাদের অনেক সমস্যা হবে।
প্রসঙ্গত, একজন মানুষ তার কান্ডজ্ঞান হারিয়ে কিভাবে যে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে সেইটা আসলে সত্যিই লজ্জাজনক। শিক্ষা প্রাঙ্গন থাকবে সকল বাঁধা-বিপত্তি মুক্ত। শিক্ষা প্রাঙ্গন কারো পৈতৃক সম্পত্তি না।