এপার বাংলা এবং ওপার বাংলায- এই দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। তিনি শুধুই অভিনয়েই যুক্ত নন, তিনি একজন সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত এবং সে বিষয়ে নিয়মিত কাজ করে চলেছেন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল-এর আর্লি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
অফিসের কাজে প্রায়ই তাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেতে হয়। সম্প্রতি উগান্ডা সফর করেছেন মিথিলা। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং মাঠ পরিদর্শন শেষে তিনি কলকাতা চলে যান। কিন্তু এই যাত্রাপথে বাধে বিপত্তি; নানারকম বিপদের মুখোমুখি হন। আটলান্টিক মহাসাগরের ঝড়ের কারণে তিনি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) নিজের ফে”সবুক অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান এ অভিনেত্রী। তিনি একটি ভিডিও ও আপলোড করেছেন।
তিনি লেখেন, আমি সাধারণত আমার অফিসিয়াল ট্রিপ থেকে সুন্দর ছবিগুলোই শেয়ার করি। আহা-উহু করতে করতে বলে ইশশ আমারও যদি এমন একটা চাকরি হতো। আহা তুমি কতো ঘুরে বেড়াও। তাদের জন্য এই সুন্দর ছবির পেছনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। গত দুই সপ্তাহে আমি উগান্ডায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মাঠ পরিদর্শন সম্পন্ন করেছি এবং সেখানকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে একটা আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করতে পশ্চিম আফ্রিকার সিয়েরা লিওনে যাই। আমার কর্মশালা গতকাল শেষ হয় এবং আমারা গত রাতে সিয়েরা লিওন থেকে কলকাতার ফ্লাইট ছিল। যেহেতু আমি আয়রাকে বাড়িতে রেখে এসেছি, আমি কাজের বাইরে একদিনও বাইরে থাকতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, যাই হোক, আগামীকাল বিকেল থেকে ভারী বৃষ্টি হবে। সিয়েরা লিওনের রাজধানী ফ্রি টাউন আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে অবস্থিত। আর সিয়েরা লিওনের বিমানবন্দরটি ফ্রি টাউন থেকে দূরে একটি বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবস্থিত, যার নাম ‘লুঙ্গি’। ফ্রি টাউন থেকে, একটি ছোট ফেরি আটলান্টিক পেরিয়ে লুঙ্গি বিমানবন্দরে ১ ঘন্টা সময় নেয়। ঝড়ের কারণে আমি একটু বেশি চিন্তিত ছিলাম। কারণ, আমি যেমন সমুদ্র পছন্দ করি, তেমনি ঝড়ো সমুদ্রকেও ভয় পাই। আমার ফেরি, যেটাকে ‘sea coach’ বলা হয়, সেটার টাইম ছিল রাত ২টায়। আমি সন্ধ্যা থেকে আশায় ছিলাম যে আবহাওয়া রাতে হয়তো ভালো হবে। কিন্তু যত রাত বাড়ছে ততই ঝড়ও প্রকট আকার ধারণ করছে। শেষ পর্যন্ত ভয়ে ভয়ে রাত ১টায় (sea coach) সি কোচ টার্মিনালে গেলাম। লোকজন খুবই কম। আমার ফ্লাইট ছিল ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে সিয়েরা লিওন থেকে মরক্কোর কাসাব্লানকায়। সেখান থেকে দুবাই হয়ে কোলকাতায় ফেরার কথা। যাহোক তার আগে তো সমুদ্রটা পাড়ি দিতে হবে।
আমি যখন সি কোচে উঠলাম ২ টায়, তখন নৌকাটি প্রবলভাবে দুলছিল। তারপর সমুদ্রের মাঝখানে যাওয়ার পর দুলুনির সাথে সাথে মাথাটাও ঘুরতে থাকে। বড়সড় জলের ছিটা আসছিল। মনের মধ্যে নানা রকম দোয়া পড়তে পড়তে ঘড়ির কাঁটায় সময় এগোচ্ছিল না! শেষ পর্যন্ত ১ ঘণ্টাকে একজীবন ভাবার আগ মুহূর্তে ফেরি ওপারে পৌঁছাল। ফেরি থেকে নেমে বৃষ্টি ভেদ করে টার্মিনালে ছুটে যেতেই আমি ভেজা কাক হয়ে গেলাম। তারপর ভোর ৪টায় লুঙ্গি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর জন্য বাসে চড়ে বসি।
তিনি তার এই ভয়াবহ সফরের কাহিনী ইস্তাম্বুল বসেই লিখেছেন। তাছাড়া এই যাত্রার নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ভক্তদের জন্য তিনি লিখেছেন। তিনি এর আগে এমন কোন ভ”য়াবহ ঝড়ের কবলে পড়েননি। তবে তিনি পুনরায় সবার নিকট ফিরতে পেরেছেন যার কারণে তিনি সৃষ্টিকর্তার নিকটো কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।