সুইডেনের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ম্যাগদালিনা অ্যান্ডারসন, কিন্তু তিনি দায়িত্ব গ্রহন করার মাত্র ৮ ঘণ্টা পরেই তিনি পদত্যাগ করেন। গতকাল (বুধবার) অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর জোটসঙ্গী গ্রিন পার্টির কাছ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার এবং সংসদে বাজেট অনুমোদনে ব্যর্থ হওয়ার কারনে তিনি সন্ধ্যার দিকে পদত্যাগ করেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নির্বাচিত হওয়ার পর এই সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নেতা দেশটির পার্লামেন্টে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করার পর সেটি প্রত্যাখাত হয়। তখন জোটসঙ্গী গ্রিন পার্টি ম্যাগডালেনার প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। এতে ক্ষু’ব্ধতা প্রকাশ করেন তিনি এবং এরপর সন্ধ্যায় পদত্যাগের ঘোষণা দেন অ্যান্ডারসন।
এক সংবাদসম্মেলনে ম্যাগদালিনা জানান, সাংবিধানিক একটি চর্চা রয়েছে, জোট সরকারের একটি দল যখন জোট ছাড়ে তখন সরকার পদত্যাগ করে। আমি এমন কোনো সরকারের নেতৃত্ব দিতে চাই না যার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পার্লামেন্টে শরিক দলের সমর্থন নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরব।
এদিকে গ্রিন পার্টি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পার্লামেন্টে বাজেট প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর ম্যাগদালিনার ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করা সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে বাজেট ইস্যুতে পার্লামেন্ট থেকে ওয়াক আউট করলেও পরবর্তীতে ম্যাগদালিনার আস্থা ভোটে গ্রিন পার্টি সমর্থন জানাতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বামপন্থি দলটি।
এর আগে বুধবার দিনের প্রথমভাগে সুইডিশ আইনের জটিল মারপ্যাঁচে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। এতে দেশটির শতবছরের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। সুইডেনের নিয়ম অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী হতে কারও তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়ার দরকার নেই, শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তার বিরোধিতা না করলেই হলো। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি
অনুমোদিত বাজেটটি সরকারের নিজস্ব প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল কিন্তু ৭৪ বিলিয়ন ক্রোনার যেটা সরকার সংস্কারের জন্য ব্যয় করতে চেয়েছিলেন, সেটার মাত্র ২০ বিলিয়ন ক্রোনার পরের বছর বিতরনের জন্য প্রস্তাব করেন। বাজেটের লক্ষ্য ছিল কর কমানো, পুলিশ কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি এবং সুইডেনের বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন খাতে আরও অর্থ প্রদান করা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অ্যান্ডারসনের নিয়োগ সুইডেনের জন্য একটি মাইলফলক চিহ্নিত করেছিল, যা লিঙ্গ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কয়েক দশক ধরে ইউরোপের অন্যতম প্রগতিশীল দেশ হিসাবে দেখা হয়েছিল, তবে সেখানে এখনও শীর্ষ রাজনৈতিক পদে কোনো মহিলা অধিষ্ঠিত হননি।