বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী দাবি করেছেন, প্রশ্নফাঁসে যে টাকা আয় করেছেন সব আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছেন।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবেদ আলীকে প্রশ্ন করা হয়, একজন চালক হয়ে এত সম্পদের মালিক হন কীভাবে? জবাবে তিনি বলেন, আমি ১৫ বছর আগে চালক ছিলাম, এখন ব্যবসায়ী।
প্রশ্নফাঁসে কত টাকা আয় করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আবেদ আলী বলেন, প্রশ্নফাঁসে যত টাকা আয় করেছি সব আল্লাহর পথে ব্যয় করেছি।’
তাছাড়া, ‘আমার জীবনে কোনোদিন অসদুপায় অবলম্বন করিনি। গায়ে খেটে ভাগ্য পরিবর্তন করেছি’— ফেসবুকে এমনটি লিখেছিলেন পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলী। গত ১২ জুন ফেসবুকে নিজের আইডিতে পোস্ট করা এক ভিডিওর ক্যাপশনে এ কথা লিখেছিলেন তিনি।
রোববার (৭ জুলাই) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল পিএসসির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফেসবুকে সৈয়দ আবেদ আলীর পোস্ট ভাইরাল হতে থাকে।
এদিকে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস)সহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
প্রসঙ্গত, রোববার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এ তথ্য জানা গেছে, বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠত চক্রটি। এসব তথ্য নিশ্চিত করতে দেশের একটি গণমাধ্যম গেল ৫ জুলাই শুক্রবার অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাটিকে বেছে নেয়। প্রস্তুতি শেষে ছদ্মবেশী প্রার্থীকে তুলে দেয় চক্রের সদস্যদের হাতে। এরপর শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত যে প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, হোয়াটসঅ্যাপে তার একটা কপি পাঠানো হয় অন্তত ১ ঘণ্টা আগে। আর অজ্ঞাত স্থানে রেখে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের তা পড়ানো হয় আগের রাতেই।
সার্কেলের মূল মালিক বিপিএসসির অফিস সহকারী সাজেদুল ইসলাম জানান, উপপরিচালক মো. আবু জাফরের মাধ্যমে ২ কোটি টাকার বিনিময়ে শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করা হয়। তিনি বড় কর্মকর্তাদের ট্রাঙ্ক থেকে পরীক্ষার আগের দিন আমাকে প্রশ্ন আমাকে সরবরাহ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি আরও জানি ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে। এ বিষয়ে সিআইডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রশ্নফাঁস চক্রের ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। সাঁড়াশি অভিযান চলছে। যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যাবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছি।