আব্দুল্লাহ আল মামুন যিনি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন তিনি তার দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রয়োজনে ‘এক-৪’/৭’ ব্যবহার করার জন্য হু’/মকি দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা গিয়েছে, মাইক ব্যবহার করে জনসভায় প্রকাশ্যে মামুন বলেছেন, আমরা রফিকুল ইসলাম ধনু মিয়াকে পাস করানোর জন্য একত্রে আসবো, শুধু আমাদের একে-৪৭ নিয়ে আসবো না, যা যা দরকার সেগুলো নিয়েই হাজির হবো। এই আওয়ামী লীগ নেতার ভাষনের ৭ মিনিট ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিওটি দেশের অন্যতম একটি গনমাধ্যমের হাতে। ভিডিওটি মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয় এবং সেটা গনমাধ্যমটির কর্মীদের কাছে দেওয়া হয়। ভিডিওর ১ মিনিট থেকে ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের মধ্যেই এই ধরনের বি’/স্ফো’রক বক্তব্য প্রদান করেন তিনি।
তিনি বলেন, এমপির চোখ লাল বর্ণ হয়ে আছে। আওয়ামী লীগের চোখ লাল হয়ে আছে। এমপি সাহেবের সমর্থন আছে আমার কথায়। আমি তার নির্দেশেই এসব বলছি। আব্দুল্লাহ আল মামুন আরো বলেন, প্রশাসন আমাদের, পু’/লি’শ আমাদের, সরকার আমাদের। আর কিছু বলার দরকার আছে?”
আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্যের পর ইউনিয়নের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আ’/ত’ঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ না হওয়ারও আ’/শ’ঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে নাম ও পরিচয় প্রকাশ করে কেউ এ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
গতকাল শুক্রবার (৫ নভেম্বর) শেষ বিকালে বাজিতপুরের হুমাইপুর ইউনিয়নের টান গোসাইপুর গ্রামে অবস্থিত ‘হুমাইপুর ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদরাসা’র মাঠে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ধনু মিয়ার পক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রকাশ্যে এ ধরনের হু’/মকি দেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে অজানা দুর্বৃত্তরা হুমাইপুরের চৈতনপুর ও নামা গোসাইপুর গ্রামের মাঝখানের রাস্তার ওপর ঝোলানো দলীয় প্রতীক নৌকা পু’/ড়ি’য়ে দেয়। এর প্রতিবাদেই এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
হুমাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মো. আরিফুজ্জামানের সভাপতিত্বে আব্দুল্লাহ আল মামুন ছাড়াও বক্তব্য দেন দলের চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ধনু মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন, বাজিতপুর পৌর আওয়ামী লীগের নেতা শওকত আকবর, সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল হক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হোসাইন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নৌকার বাইরে কাউকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। নৌকার ভোট হবে এইরকম টেবিলের ওপর ওপেন’। মেম্বার প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এজেন্টদের বলে দেবেন, নৌকার ভোট কাইত্যার তলে (পাটির আড়ালে) হবে না, নৌকার ভোট হবে সবার সামনে। কোনো মেম্বার প্রার্থীর এজেন্ট বি’রোধিতা করলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বের করে দেব’। এক প্রার্থীর প্রতি ইশারা করে তিনি বলেন, ‘কে যেন বলেছে প্রয়োজনে র’/ক্ত দেবে। আমরা আমাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পাঁচ গুণ র’/ক্ত দেব’।
এদিকে পিবিআই সূত্র জানায়, সম্প্রতি বাজিতপুর পৌর শহরের হাইপ্রোফাইল সাচ্চু হ’/’ত্যা মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে পিবিআই। অভিযোগপত্রে হ’/’ত্যা’কাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আবদুল্লাহ আল-মামুনকে উল্লেখ করা হয়েছে যার নির্দেশে এই হত্যাকান্ড পরিচালনা করা হয়েছে। এ মামলায় গত বছরের ১১ নভেম্বর পিবিআই মামুনকে গ্রেপ্তার করার পর প্রায় চার মাস কা’রাভোগের পর জা’মিনে মুক্তি পান তিনি।
সরেজমিনে খোঁজ নেওয়ার পর জানা গিয়েছে, বাজিতপুরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বেশ কয়েকজন প্রার্থী ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে যার কারনে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে বাজিতপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আগামী ১১ নভেম্বর। এই উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকাযর কারনে ঐ ৩ জন প্রার্থী কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।