রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। শনিবার (১২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত দুই শিক্ষকের সম্মাননা প্রদানের ঘটনায় নাহিদ ইসলাম তার নিজস্ব সম্মাননা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি এই দুই শিক্ষকের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এই সিদ্ধান্ত নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় এক শিক্ষার্থী বিরোধিতা প্রকাশ করেন, যিনি উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ রায় এবং কলা অনুষদের ডিন শফিক আশরাফের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থী জানান, কমলেশ রায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা উসকে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত এবং শফিক আশরাফ, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পর বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছিলেন।
শিক্ষার্থী বলেন, “স্বৈরাচারের দোসরদের সম্মাননা দেওয়া মানে দেশের মানুষের ও শিক্ষার্থীদের সাথে বেইমানি করা। তাদের জন্য আজকে এই মঞ্চে সম্মাননা প্রদানের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” এই বক্তব্যের পরপরই অনুষ্ঠানে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামো থেকে ব্যবস্থা বিলোপ করা হবে। আপনারা যে অভিযোগটি তুলেছেন সে বিষয়ে আমি জানতাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য যেন আপনাদের অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। ফ্যাসিবাদ-মুক্ত বেরোবিতে এসে যেদিন আপনাদের দাবি পূর্ণ করতে পারব সেদিন সম্মাননা গ্রহণ করব।
এই ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সবাই তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের প্রশংসা করেন।
সুলতান মাহবুব নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে ধন্যবাদ। এই সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে বলেই ফ্যাসিবাদ খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করতে পেরেছে তারা।
মো. অলি উল্লাহ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, সুন্দর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ উপদেষ্টা নাহিদকে। আপনাদের হাতেই এই দেশ নিরাপদ। দোয়া করি আপনাদের মাধ্যমেই যেন এই দেশ উন্নতের শিখরে পৌঁছায়।
মাহফুজুল ইসলাম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, এটি সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত। গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসর বাংলাদেশের কোনো জায়গায় স্থান পাবে না, এটাই হোক প্রতিজ্ঞা ইনশাআল্লাহ।
মো. শাহীন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রিয় ভাই নাহিদ ইসলাম ধন্যবাদ।