গত ১৩ই নভেম্বর রবিবার না ফেরার দেশে চলে গেলেন গায়ক আকবর। তাঁর প্রয়াণে বিনোদন জগতের অনেকেই শোকবার্তা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে আকবর আলী গাজী জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার জীবনাবসনে স্ত্রী এবং এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। তার কন্যা সন্তান বয়সে অনেক ছোট, আর এই অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে যেন দূ:খের সাগরে ভাসলো।
‘আব্বু আমার কপালে চুমু দিয়ে বলে, এটাই শেষ দিয়ে গেলাম। আর কোনোদিন দেব না। আমি মনে হয় বাঁচব না। তোদের রাস্তায় ভাসিয়ে দিয়ে গেলাম। আমাকে মাফ করে দিস।’ আকবরের একমাত্র মেয়ে অথৈ কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাবাকে হারানো ছোট্ট মেয়েটির কান্না যেন কোনোভাবে থামছেই না।
গায়ক আকবরের প্রয়ানে শোবিজের অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন। অভিনেতা জায়েদ খান তার সঙ্গে তোলা একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, মৃ”ত্যু নিশ্চিত। গায়ক আকবর ভাই প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন বাঁচার। কিন্তু আল্লাহ সবকিছু নির্ধারণ করে রেখেছেন। আল্লাহ আপনাকে জান্নাতবাসী করুন।
আকবরের মেয়ের জন্য ক্ষমা চেয়ে তিনি লেখেন, আকবর ভাইয়ের ছোট্ট মেয়ের জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১৮ বছর আগে আকবর আলী গাজী কিশোর কুমারের গান ইত্যাদি মঞ্চে গেয়ে পরিচিতি পান। এরপর বাজিমাত করে তার মৌলিক গান ‘তোমার হাত পাখর বাতাসে’ পরিবেশন করে। গানটির অডিও ও ভিডিও দুটোই সুপার হিট হয়। দেশ-বিদেশের মঞ্চে গান গেয়ে জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু আকবর হঠাৎ কিডনি রোগে আক্রা”ন্ত হন। ডায়াবেটিসও হয়। জীবনের ছন্দ পতন ঘটে। বছরের পর বছর ধরে চলছে সংকট। ভাগ্যের চাকা কিছুটা ঘুরাতে পারলেও, সেই ভাগ্যের পরিহাসে আকবর আবার সংকটের সম্মুখীন হন।
কিছুদিন আগে রাজধানীর বেটার লাইফ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে তার ডান পা কে’টে ফেলা হয়। এরপর ৫ নভেম্বর কিডনি জটিলতায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তারদের সমস্ত প্রচেষ্টা বৃথা যায় এবং আকবর না ফেরার দেশে চলে যান।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) বাদ জোহার ধর্মতলা মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে কারবালা কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে আকবরকে শায়িত করা হয়।
গায়ক আকবর দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের জটিল অসুখে ভুগছিলেন। ডায়াবেটিস, কিডনি রোগসহ তিনি বেশকিছু রোগে আ”ক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করেছিলেন, কিন্তু সেই অর্থ তাকে তার চিকিৎসার জন্য ব্যয় করতে হলো। যার কারনে তার পরিবার এখন প্রায় নি:স্ব হয়ে পড়েছে।