Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবীর স্ত্রী পেয়েছেন ভিজিডি কার্ড

প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবীর স্ত্রী পেয়েছেন ভিজিডি কার্ড

নিঃস্ব, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত এবং পরিত্যক্তা মহিলাদের উন্নয়নের জন্য মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর (ভিজিডি) কর্মসূচির অধীনে কার্ড বিতরণের জন্য একটি সরকারি নীতি রয়েছে। এই নীতিমালা ভঙ্গকারী ধনী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী এবং প্রবাসীদের স্ত্রীদের এই কার্ড দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি তাদের স্বজনদেরও এই কার্ড দিয়েছেন।
এমনই ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নে। এ নিয়ে পুরো ইউনিয়নে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি এখন আলোচনায় পরিণত হয়েছে। ধনী নারীদের বাদ দিয়ে দরিদ্র নারীদের নামে ভিজিডি কার্ড বরাদ্দের দাবি উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রঞ্জিত মণ্ডলের কানন মণ্ডল (৪৫), মেয়ে নুপুর মণ্ডল (২০) ও তার ভাইয়ের স্ত্রী নমিতা মণ্ডল (৪৭) ভিজিডি কার্ড পেয়েছেন। .

এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য নমিতা গাঙ্গুলী তার ধারাবশাইল গ্রামের হরবিলাস বৈরাগীর স্ত্রী সঙ্গীতা হালদারকে (২৮) ভিজিডি কার্ড দেন। হারবিলাস বৈরাগী এলাকায় একজন সচ্ছল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার বাড়িতে একটি পাকা দালান রয়েছে।

এদিকে কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের স্ত্রীরাও এই ভিজিডি কার্ড থেকে বাদ যাচ্ছেন না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কান্দি ইউনিয়নের ধারাবশাইল বাজারের হোটেল মালিক গোবিন্দ বসুর স্ত্রী মঞ্জু বসু (২৫), ধারাবশাইল গ্রামের প্রবাসী অপূর্ব কুমারের স্ত্রী লতা মল্লিক (৩০), গজালিয়া গ্রামের সরকারি কর্মচারী প্রভাস সমাধারের স্ত্রী রেভা জয়ধর। ভিজিডি কার্ডও পেয়েছেন।

হোটেল মালিক গোবিন্দ বোসের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইউপি সদস্য রঞ্জিত মণ্ডলকে নির্বাচিত করেছি। তাই বিনিময়ে তিনি আমার স্ত্রী মঞ্জু বোসকে একটি ভিজিডি কার্ড দেন। এই কার্ড পেয়ে আমরা উপকৃত হয়েছি। এজন্য আমরা ইউপি সদস্যের কাছে কৃতজ্ঞ।

ইউপি সদস্য রনজিত মন্ডল বলেন, আমি অস্থির। তাই আমাদের চেয়ারম্যান তুষার মধু আমার স্ত্রী কানন মন্ডলকে একটি ভিজিডি কার্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া আমার মেয়ে ও আত্মীয়স্বজন যারা কার্ড পেয়েছেন তারা সবাই গরীব। ভিজিডি কার্ডের জন্য যোগ্য। তাই তারা কার্ড পেয়েছে।

কান্দি ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের মিলন মধু, অমিতাভ মন্ডল, অর্জুন রায় জানান, ভিজিডি কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম হয়েছে। ইউপি সদস্যরা তাদের আত্মীয়-স্বজন, কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের স্ত্রীদের নামে অন্তত ২৫টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ করেছেন। এতে বঞ্চিত নারীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাই ধনী ছাড়াও দরিদ্রদের মধ্যে এই কার্ড বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যাতে ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।

ইউপি চেয়ারম্যান তুষার মধু জানান, ইউপি সদস্যরা ভিজিডি কার্ডের তালিকা করেন। তারা আমাকে যে তালিকা দিয়েছে তাতে আমি স্বাক্ষর করেছি। পরে ওই তালিকা কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠাই। এই তালিকা থেকে যদি কোনো সচ্ছল মহিলার নাম না থাকে, তাহলে তা সদস্যদের ভুলের কারণে হতে পারে। আমি ভিজিডি কার্ড তালিকাভুক্ত না.

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী জানান, কোন ইউনিয়নে নিয়মের পরিপন্থী কোন মহিলাকে কার্ড দেওয়া যাবে না। অযোগ্য কাউকে কার্ড দেওয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে তা সংশোধন করা হবে। দুস্থ মহিলাদের কার্ড প্রদান নিশ্চিত করা হবে।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *