রাজবাড়ী সদর উপজেলার মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে রাজবাড়ীর বিচারাধীন মামলা মোকাবেলায় বিবাদীদের পক্ষে মিথ্যা সনদ প্রদান করে মামলার বাদীকে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ তথ্য দিয়ে সনদ প্রদানের অভিযোগে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান শেখ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান রাজবাড়ী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১২ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, মুলঘর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানকে ফৌজদারি আদালতে বিচারাধীন মামলার মেরিটকে আসামিদের অনুকূলে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে মামলার ভিকটিম সম্পর্কে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ তথ্য দিয়ে প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় এবং তার কারণ দর্শানোর জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।
জানা যায়, ২০২২ সালের ১ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার পশ্চিম মুলঘর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মওদুদ মিয়া পান্নার স্ত্রী বিউটি আক্তার বর্ষীকে (২৩) ধারালো অ/স্ত্র দিয়ে গলা কেটে হ/ত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। ৮ মার্চ বিউটির শাশুড়ি মোছলেমা পারভীন বাদী হয়ে পূর্ব মুলঘর গ্রামের এহতেশামুল হক ফারুক (৫৫) ও একই গ্রামের ফরিদ সরদারের (৪৭) বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেন।
আসামিদের পক্ষে মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান মামলার ভিকটিম বিউটি বেগমের চরিত্র সম্পর্কে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ তথ্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে সার্টিফিকেট প্রদান করেন। ইউপি চেয়ারম্যান হলফনামায় অভিযুক্তদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
পরে ভুক্তভোগী বিউটি আক্তার বর্ষীসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসককে ১৩ অক্টোবর, ২০২২ তারিখে ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদুজ্জামানের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।