প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে যা বললেন জাতিসংঘের মহাসচিব

বাংলাদেশে চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সহানুভূতির সঙ্গে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা এক চিঠিতে এই আশ্বাস দেন। চিঠিতে তিনি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি দৃঢ় সমর্থন প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব এবং রাখাইনে মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের সঙ্গে একমত হয়েছেন। এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন মহাসচিব। ৭ ফেব্রুয়ারি, রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি খলিলুর রহমান এই চিঠি মহাসচিবের কাছে পৌঁছে দেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব চিঠিতে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং আপনার নেতৃত্বে সংস্কারপ্রক্রিয়ায় আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলের ওপর রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব, পাশাপাশি রাখাইনে মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়টি নিয়ে আপনার উদ্বেগ আমি সমর্থন করি। রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা প্রদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করতে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও সংগঠিত করবে। মিয়ানমারের সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য আসিয়ান এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবো। এর মধ্যে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরির বিষয়টিও থাকবে।’

মহাসচিব আরো বলেন, ‘রাখাইনের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা এবং জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে আমরা কীভাবে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে পারি, তা নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি। জাতিসংঘ জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী এবং মিয়ানমারের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীদের মাধ্যমে এই বিষয়ে কাজ এগিয়ে যাবে, যাতে রাখাইন ও মিয়ানমারে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাছে দ্রুত এবং নিরাপদ মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে পারে।’

মহাসচিব বলেন, ‘আমি আশা করি যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে সম্মেলনটি বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য একটি সমাধান আসবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পরামর্শের পর আমরা সম্মেলনের ফলাফল ও পরিকল্পনাগুলোর জন্য অপেক্ষা করছি, যাতে জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় প্রক্রিয়াটি সবচেয়ে ভালোভাবে সমর্থন করা যায়।’ আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ, রমজান মাসে বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের মহাসচিব অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।