বাংলাদেশের মানুষের বিপদ দেখলে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী কখনই বসে থাকতে পারেন না । তিনি অতিসত্ত্বর ছুটে যান ঘটনা স্থলে এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যান। তার মতো একজন জন দরদী প্রধানমন্ত্রী পাওয়া সত্যিই অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। দেশ জুড়ে বন্যায় সব কিছু উলটপালট হয়ে গেছে। আর সেই দৃশ্য দেখে প্রধানমন্ত্রী এক মুহূর্ত বসে না থেকে ছুটে গেলেন বম্যাকবলিত মানুষের কাছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিকে তাকালে দেখা যাবে, প্রতি ১০-১২ বছর পর পর বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে। তাই আমাদের সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, এবার দেশে বড় বন্যা শুরু হয়েছে। তাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বহু মানুষকে। মানুষের দুর্দশা দেখে ছুটে এসেছি।
মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে সিলেট সার্কিট হাউজে বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও বন্যার্তদের পুনর্বাসনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এ দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তিনি তা করতে পারেননি। এর আগেও তাকে হত্যা করা হয়েছিল। তবে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।
“আমি বলব চিন্তার কিছু নেই,” পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি ইতিমধ্যে আমার অফিসকে বন্যার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছি। প্রায় দেড় মাস আগে সবাইকে বলতাম এবার বড় বন্যা হবে, তার প্রস্তুতি নিতে। প্রাকৃতিক অবস্থা দেখলেই তা অনুমান করা যায়।
তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলের বন্যার্তদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় সব খাবার ও ওষুধ দেওয়া হবে। বন্যায় মাছ চাষিরা যাতে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে সেজন্য সরকার ব্যবস্থা নেবে। বন্যায় যারা কাজ করছেন তাদেরও সতর্ক ও সতর্ক থাকতে হবে। বন্যার পানিতে যাতে কেউ ঠান্ডায় অসুস্থ না হয়।
বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা নতুন কিছু নয়, সরকার ও বিরোধী দল সব ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
প্রাকৃতিক জলাভূমি – জলাভূমি রক্ষা করা প্রয়োজন: IPD
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে এই বন্যা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে বেঁচে থাকার মানসিকতা থাকতে হবে। সেজন্য অবকাঠামোগত সব উন্নয়নের কথা মাথায় রাখতে হবে।
এর আগে সকাল ৮টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে সিলেটে বন্যা মো.
পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পথে তিনি লো-ফ্লাই মোডে হেলিকপ্টার থেকে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। পরে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সকাল ১০টায় তিনি সিলেট সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হন।
প্রসঙ্গত, ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে রেকর্ড বৃষ্টি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকায় চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে। মৌসুমের তৃতীয় দফায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের অন্তত ৪০ লাখ মানুষ প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষের মধ্যে চলছে হাহাকার আর হাহাকার। মানুষ ছুটছে আশ্রয়ের খোঁজে। প্রাপ্তবয়স্করা শিশুদের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে থাকে। আটকদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুষ্ক ও উঁচু জায়গা যেখানে পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটে এটি ভ/য়াবহ বন্যা।
সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাকে ১২২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভ/য়াবহ বন্যা বলে অভিহিত করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। অন্যদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) মুখপাত্র মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ২০০৪ সালের বন্যার পর এটাই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। এ দুই জেলায় স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বানভাসীরা যখন বন্যার কড়াল থাবায় দিশেহারা তখনি তাদের পাশে গিয়ে দাণনড়ালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে গিয়ে বানভাসীদের সকল ধরণের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় দেশের মানুষের বিপদের সময় পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।