Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / National / প্রধানমন্ত্রী ফিরলে সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

প্রধানমন্ত্রী ফিরলে সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর প্রশাসনে সচিবের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্য সচিবের অবসরে যাওয়ায় এই রদবদলের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না হলে নতুন নিয়োগের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি পদে নড়াচড়া হবে। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতিপ্রেষণ অনুবিভাগে এপিডির (অতিরিক্ত সচিব) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কিছুটা বিলম্বে হলেও নতুন মুখ দেখা যাবে। সংবাদ মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।

জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী এখন সরকারি সফরে লন্ডনে রয়েছেন। আগামী ৪ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরবেন। এরপর এসব পরিবর্তনের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হবে। আগামী সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৩ অক্টোবর। তার জন্মদিন ১৪ অক্টোবর। অবসরের পর ছুটিতে যাবেন তিনি। এই হিসাবে, শেষ কর্মদিবস হবে ছুটিতে যাওয়ার আগের দিন। তবে একাধিক সূত্র এখন পর্যন্ত জানিয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রায় চূড়ান্ত। তবে কোনো কারণে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দেওয়া হলে পরবর্তী নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। একজন ভদ্র ও মৃদুভাষী পেশাদার আমলা হিসেবে তার যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে। তবে আরো দেড় বছর পর অবসরে যাবেন তিনি। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব একজন শতভাগ পেশাদার আমলা হিসেবেও সুপরিচিত। প্রশাসনের শীর্ষ পদে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ছিলেন। প্রশাসন ক্যাডারের ৮৬ ব্যাচের এই কর্মকর্তা গত ৩ জানুয়ারি ২৪তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের চাকরির মেয়াদ ৯ অক্টোবর শেষ হচ্ছে। তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের পরিপ্রেক্ষিতে, কেউ কেউ অবাক হবেন না যদি তাকে শেষ মুহূর্তে চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে কর্মরত সচিবদের মধ্য থেকে সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে। এ কারণে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেনকে এই মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত সমাজকল্যাণ সচিবের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। প্রশাসন ক্যাডারের ১১তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা গত বছরের ১৮ মে সচিব পদে পদোন্নতি পান। প্রশাসনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)-১ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেনও চার শতাধিক কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিত। তবে তার চাকরির মেয়াদ এখনো প্রায় চার বছর বাকি।

এদিকে সম্প্রতি সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ১৩তম ব্যাচের মো. আব্দুর সবুর মন্ডলকে একই সময়ে নিয়োগ দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যিনি নিয়োগ পাবেন, তার খালি হওয়া মন্ত্রণালয়ে সবুর মন্ডলের নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত তার পূর্বের পদে সংযুক্তি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও নিম্নপদে তার এই দায়িত্ব পালনকে প্রশাসনের বেশির ভাগ কর্মকর্তা মেনে নিতে পারেননি।

অক্টোবরের শেষে অবসরে যাবেন আরেক সচিব। নভেম্বরে তিন সচিবের পদ শূন্য হবে। সব মিলিয়ে নভেম্বরের মধ্যে সচিব পদে অন্তত দুই-তিন দফায় রদবদল হবে।

কে হচ্ছেন এপিডি : এখন পর্যন্ত ১৫তম ব্যাচের কয়েকজন অতিরিক্ত সচিবের নাম আলোচনায় রয়েছে। তারা হলেন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান; স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ডা. মো. সারোয়ার বারী; মালয়েশিয়ায় বিদেশস্থ মিশনে কর্মরত নাজমুস সা’দত সেলিম; সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) মাহবুব আলম তালুকদার; অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ব্যয় ব্যবস্থাপনা) মো. মফিদুর রহমান; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মহিদুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক সারোয়ার আলম। যদিও সবার আগে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং বিমানের এমডি শফিউল আজিম ছিলেন পছন্দের শীর্ষে। তবে অতীতে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার থেকে সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার নজির সবসময়ই রয়েছে।এপিডি পদে টপডাউন পদায়ন করা হয়নি। অপরদিকে বিমানের এমডি শফিউল আজিম খুবই পেশাদার আমলা। ইতোমধ্যে তিনি বিমানের হাল শক্ত করে ধরার কারণে সেখান থেকে তাকে আনার পক্ষে নন অনেকে।

এদিকে এপিডি নিয়োগের ক্ষেত্রে অতীতে কখনো এক ব্যাচ ডিঙ্গিয়ে পদায়ন করা হয়নি। এ ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এপিডি হিসাবে রয়েছেন ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ফলে ধারাবাহিকতা রক্ষায় এক ব্যাচ জুনিয়র ১৫তম ব্যাচ থেকেই নতুন এপিডি নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্রত্যাশা করছিলেন ব্যাচ ভেঙে নিয়োগ দেওয়ার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলে এপিডি উইংয়ে কর্মরত অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানার নাম থাকবে সবার শীর্ষে। তিনি বরাবরই প্রশাসনে একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসাবে সুপরিচিত।

About Rasel Khalifa

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *