২০১০ সাল থেকে এই পর্যন্ত অনেক মানুষ গুম হয়েছে। খালি হয়েছে স্বজনদের বুক। তাদের সবার একই কথা প্রশাসন দিয়ে তাদের স্বজনদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আর তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। কেন তাদেরকে তুলে নিয়ে গুম করা হয়েছে? কি তাদের অপরাধ? কোন পরিবারের স্বজনরা এ বিষেয়ে তথ্য দিতে পারেনি। সুধু তাদের আকুতি আমাকে আমার কারো সন্তান,বাবা, স্বামি , তো কারো ভাইকে ফিরিয়ে দিন।
নিখোঁজ’ ব্যক্তিদের স্বজনরা ‘নিখোঁজ’ ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ‘ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করেন তিনি। এদিকে নিখোঁজদের স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণ।
মানববন্ধনে নিখোঁজ হওয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চৌধুরী আলমের ছোট ভাই খুরশেদ আলম বলেন, ২০১০ সালের ২৫ জুন আমার বড় ভাইকে ইন্দিরা রোড থেকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারকে বলছি, আমার ভাইকে খু/ ন করলে লাশ ফেরত দিতে একমুঠো মাটি দিতে হবে। বিচার চাইব না। আর কোনো দাবি নেই। আমি শুধু আমার ভাইয়ের লাশ চাই।
নিখোঁজ সেলিম রেজার বোন রোখসানা খানম মুন্নি জানান, ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে প্রশাসনের নামে সেলিম রেজাকে তুলে নেওয়া হয়। আজ পর্যন্ত তাকে পেলাম না। আমরা প্রথমে জিডি করি তারপর মামলা করি। পুলিশে, ডিবিতে, মানবাধিকার কমিশনে গিয়েছিলাম। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আপনি মানবতাবিরোধীদের বিচার করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হ/ ত্যার বিচার করেন, আমার ভাইকে এত বছর ধরে গুম করে রাখা হয়, এটা কি মানবতাবিরোধী অপরাধ নয়? দেশে আইন নেই, বিচার নেই? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনাকে রায় দিয়েছি। আমার বাবা মারা গেছেন, আমার মা মৃ/ ত্যুশয্যায়, আমরা কি আমার ভাইকে দেখতে পারি না?
২০১৮ সালে নিখোঁজ মোহন মিয়ার বাবা শমসের আলী বলেন, ২০১৮ সালে মোহন আমার পাশে ঘুমিয়ে ছিল। গভীর রাতে র্যাব তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যায়। হাইকোর্টে মামলা, রিট করেছি। র্যাব অফিসে গেলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার ছেলের খোঁজ পাইনি। আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমার ছেলের কি দোষ? আমাদের কি বেঁচে থাকার অধিকার নেই? তাহলে প্রশাসন কেন হারাবে। আমার ছেলে নিখোঁজ কেন? প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই।
মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা বারবার হাজির হচ্ছি একটাই প্রশ্ন, আমাদের পরিবারের সদস্যরা কোথায়? সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। গুম-খুনে সরকার জড়িত। কিন্তু দূরে নয়। আমরা অবশ্যই বিচার পাব। আগামী দিনে এসব গুম-খুনের বিচার করব।
এই ঘটনায় সরকারের বড় একটা চক্রান্ত রয়েছে বলে ধারনা করছে ভুক্তভোগীদের পরিবার। তবে কোন অপরাধে তাদরে সাথে এমন করা হয়েছে সেটা আজও স্বজনদের কাছে অজানা। তদের হারিয়ে যাওয়া বুকের ধন বেঁচে আছে না মরে গেছে সেটাও জানেনা তারা।