গেলো বেশ কিছু দিন আগে ওয়াসার এমডি তাকসীমের অবৈধ সম্পদের পরিমান সামনে আসে দেশবাসীর। আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে আসে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের মার্কিন যুক্তরাষ্টে থাকা অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি। এ নিয়ে এবার বিশেষ একটি লেখনী লিখেছেন জার্নালিস্ট জুলকারনাইন সায়ের। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বিশেষ সহকারী ও সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে তার গোপন সম্পদ ছাড়াও আমরা আরো বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য উদঘাটন করি যার কয়েকটি আপনাদের জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করছি।
১. যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবস্থায় ১৯৮৮ সালে জনাব আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ ট্রিনি লামাদ্রিদ নামক একজন আমেরিকান নাগরিককে বিয়ে করেন। আমাদের সন্দেহ সম্ভবত মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যেই এই বিয়েটি করেছিলেন জনাব গোলাপ। নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যে এ ধরনের কন্ট্রাক্ট ম্যারেজকে যুক্তরাষ্ট্রে ম্যারেজ ফ্রড হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি ফেডারেল অপরাধ, কোন ব্যক্তি গ্রীন কার্ড/নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ করেছে এটা প্রকাশ পেলে ওই ব্যক্তির ও জড়িত নাগরিককে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।
জনাব গোলাপ যাকে বিয়ে করেছিলেন ট্রিনি লামাদ্রিদ তিনি বয়সে গোলাপের চাইতে প্রায় ২০ বছরের বড় এবং গোলাপের সাথে বিয়ের আগে তিনি ১৯৮৩ সালে একই ধরনের আরেকটি বিয়ে করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটার ডাটাবেজ থেকে ট্রিনি’র বর্তমান ঠিকানা খুঁজে পেলেও তাকে ওই ঠিকানায় পাওয়া যায়নি, তার পরিচিতরা বলেন তিনি অনেকটা ভবঘুরে জীবনযাপন করেন আর সে কারনেই মূল প্রতিবেদনে এই অংশটি উহ্য রাখা হয়। এখানে আরো উল্লেখ করা উচিত যে ট্রিনি লামাদ্রিদ ও আবদুস সোবহান গোলাপের বিবাহ বিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের কোন তথ্য আমরা পাইনি।
২. আবদুস সোবহান গোলাপ তার নির্বাচনী হলফ নামায় নিজেকে একজন পিএইচডি যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি নামের সাথে ডক্টরেডের টাইটেল সংযুক্ত করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি নামের যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি পিএইচডি সম্পন্ন করেন বলে প্রকাশ করে থাকেন, সেটি আসলে একটি ডিগ্রী মিল বা ভূয়া ডিগ্রী বিক্রির প্রতিষ্ঠান। এর আদৌ কোন প্রাতিষ্ঠানিক অস্তিত্ব নেই। যে কোন ব্যক্তিই অর্থের বিনিময়ে এখান থেকে যেকোন ডিগ্রী কিনে নিতে পারেন কিন্তু এসবের কোন স্বীকৃতি নেই। নিজ নির্বাচনি হলফনামায় এ ধরনের মিথ্যা ডিগ্রীর তথ্য দিয়ে জনাব গোলাপ যেন নিজেই তার শঠতা প্রমাণ করলেন।
প্রসঙ্গত, এ দিকে তার এত সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেলেও এ নিয়ে এখনো কিছু জানাননি তিনি। এখনো মুখোমুখি হননি মিডিয়ার। তার বিষয়ে মুখ খোলেনি আওয়ামীলীগও।