Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / প্রধানমন্ত্রীর নিকট নায়েবে আমীরের চিঠি, ভিন্ন কথা বলল হেফাজত

প্রধানমন্ত্রীর নিকট নায়েবে আমীরের চিঠি, ভিন্ন কথা বলল হেফাজত

দেশের মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসার উন্নয়নকল্পে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন এবং এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কেও নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের সমগ্র কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষার মানসহ সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের মানোন্নয়নের বিষয়ে সংগঠনের নায়েবে আমির ও গাজীপুর দেওনার অধ্যক্ষ পীর মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে যে চিঠি পাঠিয়েছেন সে বিষয়টি তুলে ধরে তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে হেফাজত আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া ও মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, দেওনা পীরের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর চিঠির সঙ্গে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই।

এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “আমরা হেফাজেতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর একটি চিঠি দেখেছি, যা ‘কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান উন্নয়নকল্পে সদয় দৃষ্টি কামনা’ শিরোনামে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা একটি চিঠি। এটি হেফাজতের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো চিঠি নয়। কোনো হেফাজতে ফোরামে আলোচনা করে তিনি চিঠিটি পাঠাননি। এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী হেফাজতকারী আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া ও আতাউল্লাহ হাফেজ্জীসহ কারও সঙ্গে কথা বলেননি। বিষয়টি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারেন হেফাজত নেতারা। অতএব, উল্লিখিত চিঠি একটি হেফাজত চিঠি হিসাবে গণ্য করা হবে না. এটি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর একটি ব্যক্তিগত চিঠি। এর সাথে হেফাজতের কোন সম্পর্ক নেই।

প্রসঙ্গত, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও গাজীপুরের দেওনার পীর প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী কওমি মাদ্রাসাগুলোর মানোন্নয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। হেফাজত নেতার চিঠি আমলে নিতে করণীয় নির্ধারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকও ডাকা হয়েছে। এ নিয়ে কওমি মাদরাসার আলেমদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৫ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন হেফাজত নেতা অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। মিজানুর রহমান ‘কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষা ও শিক্ষকের মানোন্নয়নকল্পে সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ’ শীর্ষক চিঠিতে আটটি সুপারিশ করেছেন।

এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট কওমি মাদ্রাসার বোর্ড প্রধানদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর কওমি আলেমদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। কয়েকজন দায়িত্বশীল আলেম মনে করেন, সরকারের অভ্যন্তরের কারো পরামর্শে মিজানুর রহমান চৌধুরী এ প্রস্তাব দিয়েছেন।

কওমি মাদরাসার দায়িত্বশীল আলেমদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেওনার পীর হিসেবে পরিচিত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী নিজে আলেম নন। এছাড়া তিনি কওমি মাদ্রাসার কোনো শিক্ষা বোর্ডে নেই। শুধু গাজীপুরের দেওনা এলাকায় তার একটি মাদ্রাসা আছে। তিনি অতীতে কওমি সনদের স্বীকৃতি বা এ ধরনের কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এমন প্রেক্ষাপটে কওমি মাদ্রাসার মান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার চিঠি পাঠানো এবং সেই চিঠি আমলে নিয়ে নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক কওমি আলেমদের বিস্মিত করেছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কওমি মাদ্রাসাসহ অন্যান্য সকল স্তরের মাদ্রাসার শিক্ষার মানসহ অন্যান্য বিষয়ে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবারের বাজেটে মাদ্রাসার শিক্ষার মানসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমান অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা ইতিমধ্যে অনেক উন্নয়ন সাধিত করতে সক্ষম হয়েছে।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *