প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বুধবার (২৯ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পদত্যাগপত্র পাওয়ার পর এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ভারতের পরাজয় উদযাপন, আটক ৭ ছাত্র
তিনজন উপদেষ্টা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
এরই মধ্যে তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর ক্যাবিনেট টেকনোক্র্যাটদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এই তিনজন হলেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তারা তিনজনই টেকনোক্র্যাট (নন-এমপি) কোটায় মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার এক-দশমাংশ টেকনোক্র্যাট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যায়।
এর আগে ২০ নভেম্বর সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভা থেকে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, বেসরকারি শিল্প ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওই অফিস থেকে সিদ্ধান্ত আসবে।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার পদ অবৈতনিক থাকায় সজিব ওয়াজেদ জয় পদত্যাগের আওতায় পড়েন না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে তারিক সিদ্দিকী ও সালমান এফ রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।
গত ১৯ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে টেকনোক্র্যাট কোটার দুই মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দেন। তিনজন উপদেষ্টাও সেদিন পদত্যাগপত্র জমা দেন।
প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৮ জন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ জন উপমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, যার ফলে মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
২০১৯ সালে ৬ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকায় সংসদ সদস্য নন বা নির্বাচিত ছাড়া টেকনোক্র্যাট কোটায় ছিলেন দুই মন্ত্রী। পরে এর সংখ্যা বাড়ানো হয়।
টেকনোক্র্যাট কোটায় ফের মন্ত্রী হলেন মোস্তফা জব্বার। এর আগে তিনি ওই মন্ত্রণালয়ের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ছিলেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হয়েছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এর আগে তিনি ওই মন্ত্রণালয়ের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ছিলেন। পরে ড.শামসুল আলমকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পায় ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোট পায় মাত্র সাতটি আসন।
সংবিধানের 56 অনুচ্ছেদ অনুসারে, মন্ত্রিসভা একজন প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন সেইরকম অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত হবে।