বর্তমান প্রযুক্তির যুগ। বিশ্ব জুড়ে এই প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অনেকেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার অসৎ উদ্দেশ্যে ও ব্যবহার করছে। এই সকল অনিয়ম প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রনয় করেছে। অবশ্যে এই আইন নিয়ে নানা ধরনের বির্তক রয়েছে। সকল বির্তকের মধ্যে দিয়েই বাংলাদেশ সরকার এই আইন প্রনয় করছে। এই আইন নিয়ে সরকার অপব্যবহার করছে এমন অভিযোগ রয়েছে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে এবার বেশ কিছু কথা জানালেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।
দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই রকম প্রয়োগ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিরোধী দলের কেউ এই মামলা করলে বিকেলেই খারিজ হয়ে যায়, আর বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা হলে তা সুন্দরভাবে চলতে থাকে। আজ রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উদ্যোগে প্রয়াত কয়েকজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের স্মরণে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হয়। সেখানেই রিজভী এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকার করেছে। এটা একটা জু/লু/মের আইন করা হয়েছে। অর্থাৎ এই আইনে বিরোধী মতের লোক যদি মামলা করে দেখবেন যে সকালে মামলা নেবে বিকেলে বলবে যে খারিজ করে দিয়েছেন কোর্ট। আর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলে দেখবেন সেই মামলা প্রথম থেকে সুন্দর প্রক্রিয়ায় চলবে। বিএনপির সেই লোকটিকে পু/লি/শ গ্রে/প্তা/র করবে, আদালতে হাজির করবে, কারাগারে পাঠাবে, তারপরে জামিনের জন্য তাঁর আইনজীবী বারবার আবেদন করবে—জামিন দেবে না। অনেক দিন, ছয় মাস, এক ছর, দেড় বছর পর হয়তো সে মুক্তি পাবে।’
দেশের বর্তমান অবস্থাকে ‘ভ/য়ং/কর শ্বাসরুদ্ধকর’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমরা এমন একটি সমাজে বাস করি, যেখানে কথা বলা যায় না, বাক্স্বাধীনতা নেই। ডানে-বাঁয়ে সব সময় তাকাতে হয় কেউ আমাকে অনুসরণ করছে কি না বা আমি কারও দ্বারা অনুসরিত হচ্ছি কি না।’ বর্তমান সরকারের আমলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্য কথা বলার জন্য অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর নির্যাতন-দমন নীতির কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রয়াত অ্যাক্টিভিস্টদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন রিজভী।
সরকারের বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ‘যারা গণতন্ত্র চায় ও মুক্তকণ্ঠে কথা বলতে চায়, তারা প্রত্যেকেই এই মুহূর্তে আপনার পদত্যাগ চান। আপনার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হবে কেন? এই রক্তপিপাসু সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে যদি ষড়যন্ত্র হয়েও থাকে, এই ষড়যন্ত্র ন্যা/য়/সংগত বলে আমি মনে করি। কারণ, সবকিছু মিলে আপনাদেরকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।’
রিজভী বলেন, ‘২০২২ সাল হবে বাংলাদেশের জন্য অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক বছর’ গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ বক্তব্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কি জানেন, আজকে যে সন্তানটি জন্মগ্রহণ করছে, তার পেছনে ৯৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সে জন্মগ্রহণ করছে! আপনি উন্নয়নের কথা বলেন। ২০২২ সাল বলেন, উন্নয়নের মাইলফলক হবে। এটা তো ঋণের মাইলফলক।’
বিএনপি দলের নেতাকর্মীরা নানা ভাবে অবহেলিত এবং নির্যাতিত। এমনকি অসংখ্য নেতাকর্মীদের নামে রয়েছে একাধিক মামলা। এছাড়াও অনেক নেতাকর্মী একাধিক মামলার শিকার হয়ে কারাগারে বন্ধী জীবন-যাপন করছে। তবে বিএনপি দল চলমান সকল সংকট নিরসনের জন্য আপ্রান ভাবে কাজ করছে।