ড. রেজা কিবরিয়া মূলত একজন অর্থনীতিবীদ। অর্থনীতিবীদ হিসেবে দেশে তার অনেক সুনাম রয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে অনেকেই তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করছেন। এবার সেরকমই মতামত প্রকাশ করলেন ড. রেজা কিবরিয়া। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিবো কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে নয়।
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আগামী নির্বাচনে আমি তিনশ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী দেব। তবে শেখ হাসিনার অধীনে বা আমলে কোনো নির্বাচনে নয়।’
গত ১৬ জুলাই শনিবার ‘বাংলাদেশ প্রোগ্রেসিভ এলায়েন্স অব নর্থ আমেরিকা’র (বিডিপানা) ব্যানারে যুক্তরাষ্টের বস্টনে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়েলসটন হলের ফং মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে চ্যালেঞ্জ ও উপায়’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমাদের পাবলিক রাইটস কাউন্সিল ও মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যের মতো সংগঠনগুলোই প্রকৃত বিরোধী দল। আর দালালরা হলো জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মতো দল। বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য কোন দলকে অর্থ ও সাংগঠনিক সহায়তা দেবেন তা আপনাকে বেছে নিতে হবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সময়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে তহবিল একটি বড় ফ্যাক্টর। বারাক ওবামার স্টাইলে অল্প পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি। কিন্তু সেটিও সরকার দখল করে নিয়েছে।
“আমি বিদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের বড় পদ ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছি শুধুমাত্র দেশের মানুষের সেবা করার জন্য। আমি মনে করি এখনই সময় আমার দেশের মানুষের জন্য কাজ করার। আমার বাবা শাহ এএমএস কিবরিয়ার মতো, গণফোরাম ত্যাগ করলেও জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই।বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে কাজ করব।
তিনি আরও বলেন, “আমি আমার নেতৃত্বে কিছু দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছি বলে অনেকের আস্থা পাইনি। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমি ব্রিগেডিয়ার, কর্নেল, মেজর, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ব্যাংকার, অবসরপ্রাপ্ত পেশাদার, বিচারকদের টানছি। এই মুহূর্তে তহবিল প্রয়োজন। তবেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আশা সহজে পূরণ হবে। কারণ, আন্দোলনের জন্য গ্রামে জনমত তৈরি করতেও অর্থের প্রয়োজন। আশা করি প্রবাসীরাও এগিয়ে আসবেন। আয়োজক দলের খরচ সংগ্রহ।’
ড. রেজা বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-ধনীরা আমাদের চাঁদা দিতে ভয় পায়, সরকারি দমন-পীড়নের ভয়ে।
চরম সংকটে থাকা দেশ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট দুপুরের খাবার খেতে বাসায় গিয়ে অফিসে ফিরে আসতে পারেননি। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সরকারি ভবনে হামলা চালায়। এরপর থেকে তিনি মূলত আত্মগোপনে ছিলেন। তবে বাংলাদেশেও এ ধরনের ঘটনা স্বাভাবিক নয়।
আজাদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স অব নর্থ আমেরিকা (বিডিপিএএনএ) সাধারণ সম্পাদক তানভীর নেওয়াজ। তিনি তার বক্তব্যে দেশের বিভিন্ন খাতে সরকারের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় সেতু নির্মাণে ব্যয়ের কথা তুলে ধরে তানভীর বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আলোচনায় অংশ নেন বিডিপিএএনএ’র প্রতিষ্ঠাতা মোয়াজ্জেম কাজী, সদস্য মাহমুদ রহমান ও সাজ্জাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন প্রবাসী। উল্লেখ্য, রেজা কিবরিয়া গত ২৯ জুন যুক্তরাষ্ট্রে যান। এটি তার ব্যক্তিগত সফর। তিনি মূলত চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, দেশের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য হবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন দেশের সাধারণ মানুষ। প্রত্যেকবারের মত জনগন ভোট কেন্দ্রে যেয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনগনকে ভালোবেসে এবং তাদের জনয় কাজ করে হৃদয়ের অন্তরের অন্তঃস্থলে জায়গা করে নিয়েছেন।