রুহুল কবির রিজভী হলেন বাংলাদেশের অন্যতম সাবেক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক। তিনি এর পূর্বে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী কী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বলেছেন, আমাদের দেশে ডিজেল আমদানি করতে হয়, কিন্তু পেট্রোল ও অকটেনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে উৎপাদিত গ্যাস বায়ো থেকে তৈরি। পণ্য প্রধানমন্ত্রীর কথায় হাসবো না কাঁদবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার কিনা জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ড. শেখ হাসিনাকে রাজনীতিবিদ মনে হয়। সে ঢাকার একটি কলেজে পড়ে। তিনি দেশ শাসন করছেন। যদিও আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত স্বৈরশাসক হিসেবে দেশে দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু তিনি যে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার তা জানতাম না।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আপনি কি জানেন? তারা উত্তর দিল না। আপনি কি জানেন যে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন? কিন্তু তার বক্তব্যে তাকে পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী বলে মনে হয়েছে। তিনি কিছুদিন আগে বলেছিলেন, আমাদের দেশে ডিজেল আমদানি করতে হয়, কিন্তু আমাদের দেশে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় তার বায়ো-পণ্য থেকে তৈরি হয় পেট্রোল ও অকটেন। এখন হাসবো না কাঁদবো।
রোববার (৭ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভোলায় ছাত্রদল নেতা নূরে আলম হত্যার প্রতিবাদে কৃষকদলের প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনার দুঃশাসনের উত্তাপের চেয়ে এই সূর্যের দুর্দশা বেশি কঠিন। তাই সেই দুঃশাসন মোকাবেলার প্রস্তুতি এই প্রখর সূর্যের মধ্যে বসে আজ প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই এই বার্তা পেয়েছেন যে রোদ, বৃষ্টি বা বৈশাখীর ঝড় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সহিংস আন্দোলনের পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। আপনাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।”
প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভায় কারা আছেন জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আসলে শেখ হাসিনার মন্ত্রী হওয়ার যোগ্য কে কে জানেন? নগদ মিথ্যা কে বলতে পারে। যারা মিথ্যার উৎপত্তি অর্জন করে তারাই শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় স্থান পায়। আদম বেপারী শেখ হাসিনার অর্থমন্ত্রী হয়েছেন কারণ তার অর্থমন্ত্রী মিথ্যা বলতে খুবই পারদর্শী।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন এ বছর আমাদের ৫০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকবে কিন্তু তা হয়নি, একটু কম হলেও ভবিষ্যতে ৫০ বিলিয়ন ডলার হবে। এই অর্থমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীরা বলেন, দেশ সিঙ্গাপুরের চেয়ে এগিয়ে গেছে। কিন্তু তারা (মন্ত্রীরা) যে বিমানে উঠেছিল তা সিঙ্গাপুর, কানাডা, আমেরিকা হয়ে শ্রীলঙ্কায় অবতরণ করেছিল। আমাদের অর্থনীতি চলে গেছে, আমাদের টাকা চলে গেছে, আমাদের বিদ্যুৎ চলে গেছে, সবকিছু নিঃশেষ হয়ে গেছে এবং পুরো জাতিকে দেউলিয়া হওয়ার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রদল নেতা নূরে আলমের হত্যাকাণ্ড বিএনপিকে ভীত করেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, নূরে আলম ও আবদুর রহিমের লাশের রক্ত থেকে লাখ লাখ জাতীয়তাবাদী শক্তি তাদের শার্ট খুলে এই সরকারের বুলেট মেনে নেবে। তারপরও শেখ হাসিনার ময়ূর সিংহাসন রাস্তার ধুলোয় চুরমার হয়ে যাবে।
কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, রিজভী গত বেশ কয়েক বছর তার এই পদে বহাল থেকে দলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে যেটা স্পষ্টত প্রতিয়মান। তিনি বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে বলিয়ান কন্ঠে তার বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। বিএনপির অগ্রগতির পিছনে তার অনেক অবদান রয়েছে।